৯৯৯ এ ফোনে উদ্ধার
হাজীগঞ্জ ব্যুরো
হাজীগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে স্বামী মামুন সর্দার (৩২) কে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার ভোরে জাতীয় জরুরি ৯৯৯ নম্বর থেকে ফোন পেয়ে আহত স্ত্রী কামরুন নাহার (২১) কে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় এবং স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) একেএম হাসান মাহমুদ।
এ ঘটনায় কামরুন নাহার নিজে বাদী হয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে স্বামী মামুন সর্দারকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামুন সর্দার উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম মাতৈন গ্রামের সর্দার বাড়ির দুলাল সর্দারের ছেলে। কামরুন নাহার মামুন সর্দারের স্ত্রী এবং উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের ডা. আশরাফুল এর মেয়ে।
কামরুন নাহারের পরিবার জানান, গত তিন বছর আগে মামুন সর্দারকে বিয়ে করেন কামরুন নাহার। বিয়ের পর যৌতুকের জন্য চাপ-সৃষ্টি করলে আমরা টাকা নিয়ে মামুনকে ওমান পাঠানোর ব্যবস্থা করি। ওমান যাওয়ার পর আবারো যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন মামুন। টাকা না দেওয়ায়, মোবাইলে ফোনে কামরুন নাহারকে তালাক দেয় এবং পরবর্তীতে মামুন ১০ দিনের জন্য দেশে এসে পূণরায় তাকে বিয়ে হয় ওমানে চলে যায়।
এরপর গত এক সপ্তাহ আগে দেশে আসে মামুন। এসেই কামরুন নাহারকে পূণরায় যৌতুকের জন্য চাপ-সৃষ্টি করতে থাকেন। কিন্তু যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় মঙ্গলবার রাতে তাদের মাঝে কথা কাটিকাটি হয়। একপর্যায়ে কামরুন নাহারকে বেশ কয়েকবার শারিরিক নির্যাতন করার পর, রাতে তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা চেষ্টা করলে, তার ডাক-চিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে কামরুন নাহারকে উদ্ধার করে এবং মামুনকে থানায় নিয়ে যায়।
মামলার বাদি কামরুন নাহার জানান, বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তাকে বেশ কয়েকবার মারধর করা হয় এবং এ দিন গভীর রাতে তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা চেষ্টা করেন মামুন। এ সময় তার ডাক-চিৎকারে বাড়ির লোকজন উপস্থিত হলে, তিনি বেঁচে যান।
স্ত্রী হত্যা চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করে থানা হেফাজতে থাকা মামুন সর্দার জানান, পারিবারিক কলহের জেরে কামরুন নাহার তাকে এবং তার মা, বোনকে উল্লেখ করে অকথ্য ও অশালীন ভাষায় গালমন্দ করতে থাকেন। যার ফলে তাকে (কামরুন নাহার) কয়েকটি চড় থাপ্পড় মারেন তিনি।
এ ব্যাপারে থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি জানান, আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি এবং আটক মামুন সর্দারকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।