হাজীগঞ্জে ৩ দিনে ৫টি ড্রেজার ধ্বংস ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে গত ৩ দিনে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযানে ৫টি অবৈধ ড্রেজার মেশিন ধ্বংস ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার। শনিবার (২৮ আগস্ট) সকালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে উপজেলার হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের বেলঘর গ্রামের একটি ড্রেজার মেশিন ধ্বংস এবং নগদ ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
এছাড়া একই দিনে বিকালে উপজেলা দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নের চারিয়ানি গ্রামের ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী ও জমির মালিক পালিয়ে যায়। এসময় তাদের অনুপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন অবৈধ ড্রেজার মেশিনটি ধ্বংস করা হয়। কৃষি জমি ধ্বংসের অপরাধে ড্রেজার ব্যবসায়ী ও জমির মালিকদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে উপজেলা প্রশাসন।
জরিমানাপ্রাপ্ত জমির মালিক হলেন- হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের বেলঘর গ্রামের মৃত আমিনুল ইসলামের ছেলে মো. জসিম উদ্দিন। একই অপরাধে গত ২৭ আগস্ট বাকিলা ইউনিয়নের ছয়ছিলা গ্রামের মৃত আ. জব্বারের ছেলে খোরশেদ আলম এবং অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী একই ইউনিয়নের দীঘই গ্রামের সুলতানের ছেলে শরীফকে নগদ ৫০ হাজার করে দুইজনকে নগদ ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোমেনা আক্তার।
গত ২৬ আগস্ট কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের বাজনাখাল ও সৈয়দপুর গ্রামে পৃথক-পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে জমির মালিক ও অবৈধ ড্রেজার মেশিনের ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে তাদের অনুপস্থিতিতে মেশিনের যন্ত্রাংশ খুলে ফেলে দিয়ে দুইটি ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে কৃষি জমি ধ্বংস করার অপরাধে তাকে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ৫ (১) ও ১৫ (১) ধারা অনুযায়ী জসিম উদ্দিনকে নগদ এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় ও ড্রেজার মেশিনটি ধ্বংস করা হয়।
একই অপরাধে দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ীর অনুপস্থিতিতে অপর ড্রেজার মেশিনটি ধ্বংস করার নির্দেশনা প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোমেনা আক্তার জানান, এখন থেকে অবৈধ সব ড্রেজার ধ্বংসসহ ড্রেজার ব্যবসায়ী ও জমির মালিককে আইনের আওতায় আনা হবে এবং জনস্বার্থে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত ধাকবে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট উপজেলার দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নের কাপাইকাপ গ্রামের মৃত আবুল বাসারের ছেলে বোরহান উদ্দিন খাঁনকে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে ড্রেজার মালিক পালিয়ে যান। পরে তার অনুপস্থিতিতে মেশিনের যন্ত্রাংশ খুলে ফেলে দিয়ে ড্রেজার মেশিনটি পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
একই দিনে উপজেলার কালচোঁ উত্তর ইউনিয়নের ছিলাচোঁ গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে অপর ড্রেজার ব্যবসায়ী ও জমির মালিক পালিয়ে যান। এ সময় তাদের অনুপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধ ড্রেজার মেশিনটি পুড়িয়ে ধ্বংস করার নির্দেশনা দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোমেনা আক্তার।
গত ১৭ আগস্ট উপজেলার হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সুবিদপুর গ্রামে এক ড্রেজার ব্যবসায়ী মুনাব্বর মজুমদারকে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও জমির মালিক মর্জিনা আক্তারকে নগদ ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এর আগে একই অপরাধে গত জুলাই মাসে তাদের দুইজনকে (জমির মালিক ও ড্রেজার ব্যবসায়ী) নগদ ৫০ হাজার করে মোট ১ লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গত ১৬ আগস্ট উপজেলার হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী ওই গ্রামের মৃত মমিনুল হকের ছেলে মো. সেলিমকে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এর আগে গত ১২ আগস্ট উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী হুমায়ুন পাটওয়ারীকে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা জরিমানা করা হয়।
গত ৩ আগস্ট একই অপরাধে উপজেলার হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের পাতানিশ গ্রামে তাজুল ইসলামের ছেলে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম নগদ ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এর আগে গত মাসে (জুলাই) উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ৯টি ড্রেজার মেশিন জব্দ ও পৃথক-পৃথকভাবে নগদ মোট সাড়ে ৬ লাখ জরিমানা করা হয়।
২৯ আগস্ট, ২০২১।