ক্রমেই তীব্র হচ্ছে মানবিক সংকট
আনওয়ারুল করীম
ফিলিস্তিনে ৭২৪ শিশুসহ ২২১৫ জনকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরাইল। স্বাধীনতাকামী হামাসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক আক্রমণে ইসরাইলি হামলায় অবরুদ্ধ গাজা স্ট্রিপে এখন পর্যন্ত এ পরিমাণ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৭২৪ শিশু ছাড়া ৪৫৮ জন নারী রয়েছেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসির।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এতে আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৭১৪ জন। এছাড়াও পশ্চিম তীরে ৫৪ জন মারা গেছে ও ১১০০ মানুষ আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ অষ্টম দিনে গড়িয়েছে। গত শনিবারেও উভয়পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলা অব্যাহত ছিল।
ইসরাইলের হামলায় ফিলিস্তিনে গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছে ৩২০ জন। এ পর্যন্ত মোট ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে ২ হাজার ২১৫ জন, আহত ৮ হাজার ৭১৪ জন। এদিকে মোট ইসরাইলি নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ৩০০ আর আহত হয়েছে ৩ হাজার ৪০০ জন।
শুরুতে ইসরাইলিদের নিহতের সংখ্যা বেশি হলেও, এখন ফিলিস্তিনিদের নিহতের সংখ্যা ইসরাইলিদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
এদিকে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলায় ক্রমেই মানবিক সংকট তীব্র হচ্ছে। ইসরাইলি ভূখ-ে হামাসের অভাবনীয় হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা অবরুদ্ধ করে রেখে একের পর এক অভিযান পরিচালনা করছে ইসরাইলের সেনারা। দেশটির নেতারা আগেই ঘোষণা দেন, তাদের বন্দিদের মুক্তি দেয়া না হলে গাজার বাসিন্দাদের পানিতে-ভাতে-কাপড়ে মারবে।
ইসরাইলের একের পর এক হামলায় গাজার কোথাও এখন নিরাপদ নয়। গোটা এলাকা অবরুদ্ধ করায় দেখা দিয়েছে খাবার, পানিসহ জ্বালানির চরম সংকট। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না পানি। এরই মধ্যে সেখানে থেকে প্রায় চার লাখের বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
ইসরাইলের টানা হামলায় গাজা উপত্যকা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। মুহুর্মুহু হামলায় কেঁপে উঠছে পুরো গাজা। ধসে পড়ছে একের পর এক স্থাপনা। দেখা দিয়েছে খাবারের চরম সংকট। অনেক জায়গায় নেই বিদ্যুৎ। সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন গাজাবাসী। অনেকে জীবন বাঁচাতে পরিবার নিয়ে নিরাপদ জায়গায় পালিয়েছেন। অনেকে আশ্রয় শিবিরে উঠেছেন। ফলে দেখা দিয়েছে চরম মানবিক সংকট।
শুক্রবার ওয়াদি এলাকার চার লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে এলাকা ত্যাগ করেছেন। গতকাল শনিবারেও এই ধারা অব্যাহত রয়েছে জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। সুস্পষ্ট নির্দেশনা বা নিরাপদ করিডোর ছাড়াই মানুষ বাড়িঘর ছাড়ছে। কারণ গাজার কোথাও এখন নিরাপদ নয়। এটি আরও উদ্বেগের বিষয়, কারণ হামলা অব্যাহত থাকায় আরও ধ্বংসাত্মক পরিণতি হতে পারে সেখানে।
১৬ অক্টোবর, ২০২৩।