চাঁদপুরসহ ৬টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ৯টি গ্রিড উপকেন্দ্র উদ্বোধন

উন্নত বাংলাদেশে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা হবে
…………….প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

চাঁদপুরসহ নতুন ৬টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এবং ৯টি গ্রিড উপকেন্দ্র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে মোনাজাতরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খানসহ অন্যান্যরা। -ইল্শেপাড়

এস এম সোহেল
চাঁদপুরসহ নতুন ৬টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এবং ৯টি গ্রিড উপকেন্দ্র উদ্বোধন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে ১ হাজার ৬২ মেগাওয়াটেরও বেশি বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। গতকাল সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি।
উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এক অন্যরকম ও উন্নত বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরতে সরকার কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার কাজ চলছে। উন্নত বাংলাদেশে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা হবে। এখন আর বিদ্যুতের জন্য গ্রাহকদের ঘুরতে হয় না। বরং সংযোগ পৌঁছে যাচ্ছে গ্রাহকদের ঘরে ঘরে। উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সরকার বদ্ধপরিকর। এজন্য সুনির্ধারিত পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন। এসময় তিনি বলেন, ২০,৮৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করায় দেশের ৯২ শতাংশের বেশি জনগণ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। গত ১০ বছরে ১শ’ নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সুবাদে বাংলাদেশ এখন বিদ্যুৎ ঘাটতির দেশ থেকে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানের পরিচালনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নাসিরুল হামিদ বিপু।
এসময় গণভবনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী এবং সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ এবং ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আবদুল¬াহ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুল¬াহ ইসলাম আল জ্যাকব এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্যরা।
চাঁদপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. এএসএম দেলওয়ার হোসেন, বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম ইকবাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমাসহ অন্যান্যরা।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনকৃত ৬টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে- সিরাজগঞ্জ ২৮২ মেগাওয়াট সিম্পেল সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ভোলা ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, চাঁদপুর ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, আশুগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, খুলনার রুপসায় ১০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং চট্টগ্রামের জুলদা ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র (তৃতীয় ইউনিট)। নয়টি উপকেন্দ্র হচ্ছে- রামগঞ্জ, বরিশাল (উত্তর), বারইয়ারহাট, শিকলবাহা, জলঢাকা, সুনামগঞ্জ, বিয়ানিবাজার, রাঙ্গামাটি ও মাতারবাড়ি।
জানা যায়, ৩০৬টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৬৩টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ ইতোমধ্যেই উদ্বোধন করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৪৩টি উপজেলা চলতি বছরের জুন নাগাদ উদ্বোধন করা হবে। একইসঙ্গে এদিন সাবমেরিন কেবলে সন্দ্বীপে বিদ্যুতায়নের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী নতুন যে ১২ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেন সেগুলো হলো- ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু, ঠাকুরগাঁও সদর ও বালিয়াডাঙ্গী, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ও কালুখালী, বরগুনার বামনা, হবিগঞ্জের খালাই, শায়েস্তাগঞ্জ, আজমেরীগঞ্জ ও বাহুবল এবং জামালপুরের মেলান্দহ ও ইসলামপুর।