ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা নিতে ওআইসির প্রতি রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারীর আহ্বান

সৌদি আরব ব্যুরো
মুসলিম বিশ্বের উপর ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব নিরুপণ ও তা মোকাবেলায় সহযোগিতার সম্ভাব্য রূপরেখা প্রণয়নে ওআইসির প্রতি আহবান জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। জেদ্দাস্থ ওআইসির সদর দপ্তরে মঙ্গলবার (৭ জুন) সংস্থার মহাসচিব হিসেন ব্রাহিম তাহার সাথে এক বৈঠকে তিনি আরো বলেন, উন্নয়নশীল দেশসমূহ যখন কোভিড পরবর্তী অর্থনীতি পূনরুদ্ধারে কাজ করছে, তখন এই যুদ্ধের কারণে অনেক দেশকে বেগ পেতে হচ্ছে। জবাবে ওআইসি মহাসচিব জানান, তিনি সম্প্রতি রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে পৃথক বৈঠকে এ উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছেন।
ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী জানান, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে। রাষ্ট্রদূত মহাসচিবকে জানান, এ বছরের জানুয়ারিতে মিয়ানমারের জান্তা সরকার রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার পদক্ষেপ হিসেবে মাত্র সাতশ’ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল কিন্তু আজ পর্যন্ত তারা কাউকেই ফিরিয়ে নেয়নি। এদিকে প্রতি বছর বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় ৩০ হাজার শিশু জন্ম নিচ্ছে, এতে তাদের স্বাস্থ্য সেবাসহ অন্যান্য সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে বেগ পেতে হচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে ক্রমাগত সমর্থন প্রদানের জন্য ওআইসির মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, সম্প্রতি মার্কিন সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার কর্তৃক সংঘটিত সহিংসতাকে গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করেছে, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে চলমান এ সংক্রান্ত মামলায় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী মহাসচিবকে আরও জানান, বাংলাদেশ ওআইসির সচিবালয়ে স্থায়ী মিশন খোলার বিষয়ে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে, আশা করা যায় চলতি বছরের শেষ নাগাদ তা চালু করা সম্ভব হবে। স্থায়ী মিশন খোলা হলে ওআইসির কার্যক্রমের সাথে আরও সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে বলে রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত ওআইসি মহাসচিবকে বাংলাদেশ সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণের কথা উল্লেখ করলে তিনি শীঘ্রই সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফর করে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কে আরো জানতে তাঁর আগ্রহ ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রদূত বৈঠকের জন্য ওআইসির মহাসচিবকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এছাড়া গত ৫-৬ জুন জেদ্দায় অনুষ্ঠিত ‘সংঘাত নিরসনে মধ্যস্থতা’ বিষয়ে ওআইসির ভুমিকা নির্ধারন বিষয়ে কনফারেন্সে রাষ্ট্রদূত অংশ নিয়ে, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অর্জন ও অভিজ্ঞতা কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি, এ বিষয়ে বাংলাদেশের পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

০৮ জুন, ২০২২।