একদিকে বাবার লাশ, অন্যদিকে পরীক্ষা!


মতলব উত্তর ব্যুরো
একদিকে বাড়িতে বাবার লাশ আর অন্যদিকে কলেজে এইচএসসি পরীক্ষা। এমন অগ্নিশিখার মাঝেই পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে গেল শ্রাবণী আক্তার। মতলব উত্তরে এমন একটি ঘটনা সকলের হৃদয় ছুঁয়ে গেল। গত সোমবার ছিল শ্রাবণীর ইংরেজি ২য় পত্র বিষয়ে পরীক্ষা। কিন্তু এরআগে রোববার দিনগত রাতে শ্রাবণীর পিতা আওয়ামীলীগ নেতা মমিন দেওয়ান মৃত্যুবরণ করেন।
জানা যায়, উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মমিন দেওয়ান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পারি জমান না ফেরার দেশে। তার মৃত্যুর খবরে চারিদিক শোকের ছায়া নেমে আসে। এই অকল্পনীয় মৃত্যুতে পরদিন সোমবার সকালে তার মেয়ে শ্রাবণী আক্তার পড়ে যায় বিপাকে। একদিকে বাবা হারানোর যন্ত্রণা অন্য দিকে জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে দরকার পরীক্ষা। অনেক কষ্ট যন্ত্রণার মাঝে অবশেষে নিশ্চিন্তপুর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে সে। এদিকে পরীক্ষার পর বেলা ২টায় কেন্দ্র কলেজের মাঠেই মরহুমের জানাযার নামাজ হয়।
নিশ্চিন্তপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ এটিএম শহীদুজ্জামান রবি জানান, শ্রাবণী যথাসময়ই পরীক্ষা দিতে এসেছে এবং যথাসময়ই পরীক্ষা দিয়ে হল ছেড়ে যায়। আমার জানামতে সে ঠিকঠাক মতই পরীক্ষা দিয়েছে। তবে সে অনেক মানসিক চাপে ছিল। শ্রাবণী অত্র কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ছাত্রী। তার রোল নং ৫৭।
শ্রাবণীর মামা মো. আমান জানান, শ্রাবণীর বাবার মৃত্যুর পর থেকেই আমি তার পরীক্ষায় অংশগ্রহন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ি। সে পরীক্ষায় অংশ নিতে তেমন ইচ্ছা ছিল না। বুঝিয়ে তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাই। পরে সে সুস্থ মতই পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেছে।
তিনি আরো জানান, মমিন দেওয়ান দূর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। হরিণা গ্রামের মৃত জুনাব আলী দেওয়ানের ছেলে তিনি। তার জানাযায়, ঢাকা মহানগ উত্তর যুবলীগের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিল এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক এমএ কুদ্দুসসহ সহস্রাধিক দলীয় নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহন করেন। মানসিক চাপের কারণে শ্রাবণীর বক্তব্য নেয়া যায়নি। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।