চাঁদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের বর্ধিত সভা

স্টাফ রিপোর্টার
আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কালীবাড়ি মন্দিরে বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি নরেন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তী। সভা পরিচালনা করেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রোটারিয়ান গোপাল সাহা।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে আমরাই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করেছে। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি নেই। গত ১৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রিয় কমিটি নির্দেশ করোনায় যারা পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করছে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে নীরবতা পালন করা হয়। সভায় বক্তারা বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি যে নির্দেশনা দিয়েছে তা মেনেই এবছর ও শারদীয় দুর্গা পূজা করা হবে।
কেন্দ্রীয় কমিটির ১৮ নির্দেশনা হলোঃ মাহালয়া অনুষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে করা হবে। প্রতিমা তৈরি থেকে পূজা শেষভক্ত পুরোহিত সবাই বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিহিত অবস্থায় থাকতে হবে, নিজস্ব উদ্যোগে মণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শারদীয় দুর্গাপূজা মণ্ডপগুলোতে আগত দর্শনার্থী, পুরোহিত ও ভক্ত সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, সরকার নির্দেশিত শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। পূজামণ্ডপে নারী-পুরুষের জন্য যাতায়াতের ব্যবস্থা রাখতে হবে ব্যবস্থা রাখতে হবে, এখানে শৃঙ্খলা রক্ষায় নারী-পুরুষের স্বেচ্ছাসেবক টিম রাখতে হবে। সন্দেহভাজন দর্শনার্থীদের দেহ তল্লাশির ব্যবস্থা, নারী স্বেচ্ছাসেবকরা সন্দেহভাজন ভক্তদের দেহ তল্লাশি করবে। উচ্চ শব্দে মাইক, সাউন্ড বক্স, ইকু সেট ও পটকার ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। পূজা মন্ডপে ভক্তিমূলক সংগীত ছাড়া ডিজে ও কুরুচিপূর্ণ গান বাজানো যাবে না। প্রতিমা নির্মাণসহ পূজার সার্বিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এমন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে হবে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি উপেক্ষা করে জনসমাগম করা যাবে না। পূজামণ্ডপে নিজস্ব অর্থায়নে নিরাপত্তা বিবেচনায় সিসি ক্যামেরার সংযোগের ব্যবস্থা করতে হবে। পূজামণ্ডপ ও বিসর্জনের স্থান এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সব প্রকার আলোকসজ্জা, সাজসজ্জা, মেলার আয়োজন, আরতি প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিহার করতে হবে। সাশ্রয়কৃত অর্থ গরিবের সাহায্যে ব্যবহার করার ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব অস্থায়ী খোলা জায়গায় পূজা প্যান্ডেলে দুর্গা পূজা করা হবে সেসব ক্ষেত্রে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি পরিপূর্ণভাবে মেনে পূজা করা যাবে কিনা সে বিষয়ে আয়োজকদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পূজাকালীন প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যম ব্যাক্তির সমন্বয়ে মন্দির কেন্দ্রিক শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি গঠন করতে হবে। পূজাকালীন দায়িত্বরত প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, বিদ্যুৎ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে রক্ষা করতে হবে। দৃশ্যমান স্থানে সংশ্লিষ্টদের মোবাইল নম্বর টানিয়ে রাখতে হবে। থানায় মোবাইল নম্বর সরবরাহ করতে হবে। কোন গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে যে কোনো দুর্ঘটনার সংবাদ তাৎক্ষনিক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলে জানাতে হবে। প্রয়োজনে ‘৯৯৯’ নম্বরে যোগাযোগ করতে হবে। বিজয়া দশমির শোভাযাত্রা পরিহার করতে হবে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের উল্লেখিত সব স্তরের শাখা কমিটির আওয়তাধীন পূজা মন্ডপকে সহযোগিতা করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, শারদীয় দুর্গা পূজার পর চাঁদপুর জেলার যেসব উপজেলার কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে সেসব কমিটি করা হবে। তবে আমরা এবছর কেন্দ্রিয় কমিটির নির্দেশ মেনেই শারদীয় দুর্গা পূজা করবো। তবে কোনো মন্ডপে যদি কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হয় তাহলে জেলা কমিটিকে তাৎক্ষণিক জানাতে হবে।
এসময় বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি অজিত সাহা, সেক্রেটারী রোটারিয়ান তমাল কুমার ঘোষ, চাঁদপুর হরিবোলা সমিতির সভাপতি অজয় ভৌমিক, পৌর আওয়ামী লীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাধা গোবিন্দ গোপ, অ্যাড. বিনয় ভূষণ মজুমদার, যুগ্ম সম্পাদক বিমল চৌধুরী, মহিলা সম্পাদিকা কল্পনা সরকার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কার্তিক সরকার, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. শীতল কুমার ঘোষ, দপ্তর সম্পাদক রনজিত সাহা মুন্না, চাঁদপুর সদর উপজেলা পূজা পরিষদের সভাপতি সুশীল সাহা, কচুয়া উপজেলা পূজা পরিষদের সভাপতি ফনী ভূষন মজুমদার তাফু, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পূজা পরিষদের সভাপতি হিতেষ শর্মা, মতলব দক্ষিণ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কিশোর ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক চন্দন সাহা, মতলব উত্তর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র দাস, হাজীগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের দপ্তর সম্পাদক সুজন চন্দ্র দাস, হাইমচর উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিবেকলাল মজুমদার, জুয়েল কান্তি নন্দু, পালপাড়া শীতলা মায়ের মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল প্রমুখ।
সভার শুরুতে শংক ধ্বনি করেন রনজিত সাহা মুন্না, চন্ডিপাঠ করেন কল্পনা সরকার ও গীতা পাঠ করেন সুজন চন্দ্র।
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১।