
পুরাণবাজারে ভাঙন রোধে ১০ হাজার বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে
এস এম সোহেল
চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পুরাণবাজার হরিসভা এলাকার নদী ভাঙন কিছুটা কমতির দিকে। গত শনিবার রাতে ভাঙন শুরু হলে জরুরিভিত্তিতে ১০ হাজারেরও বেশি বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কারণে সেখানে ভাঙন স্থিতিশীল রয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে মেঘনা নদীর ভাঙন স্থানসহ আশপাশ দিয়ে প্রবল বেগে ¯্রােত প্রবাহিত হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সেখানে আরো ৫ হাজার বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এছাড়া পরবর্তীতে আরো ১০ হাজার বালুভর্তি জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হবে।
তবে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পুরাণবাজার অংশে প্রায় ৫শ’ মিটার এলাকা এখনো ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন শহর রক্ষা বাঁধের দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত (৩ দিনে) হরিসভার ভাঙনস্থলে ১০ হাজার ১ শ’ ৪৫টি বালুভর্তি ব্যাগ ডাম্পিং করা হয় বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তা জানান। এদিকে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ১১ পরিবারকে জেলা প্রশাসন থেকে ২ ব্যান্ডল টেউটিন ও নগদ ৬ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান বিদেশ থেকে চাঁদপুরে এসেই শহর রক্ষা বাঁধের পুরাণবাজার হরিসভা এলাকায় ছুটে যান। তিনি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের ও কাজের খোঁজ-খবর নেন।
এসময় জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান বলেন, ভাঙনের সাথে-সাথেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম ও সচিব কবির-বিন-আনোয়ার পরিদর্শন আসেন। তাঁরা যে নির্দেশনা দিয়েছেন সে অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান, চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা কানিজ ফাতেমা, জেলা আওয়মী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান বাবুলসহ আরো অনেকে। ভাঙনের খবর শোনার পর থেকে প্রতিনিয়ত সরজমিনে উপস্থিত থেকে খোঁজ-খবর নেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।
কাজের ঠিকাদার তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী বলেন, ভাঙনের সাথে-সাথে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ভাঙনস্থলে ফেলা হয়েছে। আমরা ভাঙনরোধ করতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি। প্রতিদিন প্রায় ২শ’ শ্রমিক কাজ করছে।
উল্লেখ্য, শনিবার রাত ৯টার সময় হঠাৎ মেঘনার ভাঙনে হরিসভা মন্দির সামনের শহর রক্ষার প্রায় ২শ’ মিটার ব্লক বাঁধ ভেঙে ব্যবসায়ী মরণ সাহা ও শম্ভুনাথ মজুমদারের বাড়ি নদীগর্ভে চলে যায়। ভাঙনের ব্যাপকতায় ১৫টি বসতঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন আতঙ্কে আশপাশের আরো ৫০টি পরিবার তাদের ঘর খালি করে আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
দিনরাত পরিশ্রম করে সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রেখেছে পুরাণবাজার ফাঁড়ি পুলিশ, ডিবি, দমকল বাহিনী, সদর থানা ও পুলিশ লাইনের পুলিশ সদস্যরা।
০৭ আগস্ট, ২০১৯।