প্রতিবন্ধী মো. শাহআলমের আকুত

মো. মশিউর রহমান :
গতকাল বুধবার রূপসা বাজারে হঠাৎ হাত বাড়িয়ে দিলেন এক বেটো প্রতিবন্ধী। বললো আমাকে আল¬াহ ওয়াস্তে সাহায্য করুন। তার নাম ঠিকানা জানতে চাইলে সে সব বিস্তারিত বললো। তার বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের ইছাপুরায় (বেপারি বাড়ি)। সে মো. হারুন মিয়ার ছেলে মো. শাহ আলম (২৫)।
শাহ আলম জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী বেটো/বেটে। তারা তিন ভাই, এক বোন, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। ভিক্ষাবৃত্তি তার একমাত্র অবলম্বন। তার পরিবার খুবই গরিব। সে প্রায় ফরিদগঞ্জের বিভিন্ন হাটবাজারে ও মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসারের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে। কাজ করার মত তার সেই সক্ষমতা নেই।
প্রতিবন্ধী অক্ষম মানুষেরা চিরকালই সমাজে উপেক্ষিত ও অবহেলিত হয়ে আসছে। তাদের সঙ্গে সদাচরণ, সাহায্য-সহযোগিতা করা উচিত। বিপদ-আপদে সব সময় তাদের পাশে দাঁড়ানো মানবিক দায়িত্ব। প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে অসদাচরণ, উপহাস বা ঠাট্টা-তামাশা করা একদম উচিত নয়। শারীরিক, শ্রবণ, বাক্, বুদ্ধি ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের একটি অংশ জন্মগতভাবে প্রতিবন্ধী। অপর অংশ দুর্ঘটনার কারণে মানসিকভাবে প্রতিবন্ধিত্বের শিকার হয়।
সমাজে প্রতিবন্ধী মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ, স্বাভাবিক ও সম্মানজনক জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে। প্রতিবন্ধীদের মানবিক মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে মানুষকে কর্তব্য পরায়ণ দায়িত্বসচেতন হওয়ার তাগিদ দেয়। একজন অসহায় ও গরীব প্রতিবন্ধী সমাজে সুস্থ-সুন্দরভাবে বিকশিত আবশ্যক। সম্প্রতি জেলা প্রশাসক ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধের জন্য সরকার কর্তৃক গৃহিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তারপরও জীবন জীবিকার তাগিদে তা চলমান আছে। আমাদের এই উপজেলা অনেক অর্থবান ব্যক্তি রয়েছেন, যাহারা একটু দানের হাত প্রসারিত করলে হয়তো এই বেটো মো. শাহ আলমের পরিবার তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে স্বাবলম্বী হতে পারে। হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও সাহায্য-সহযোগিতা আমাদের ইসলামী মূল্যবোধের একটি অংশ। প্রতিবন্ধীরা শারীরিক, মানসিক কিংবা আর্থসামাজিক অক্ষমতা বা অসুবিধার কারণে স্বাভাবিক ও স্বাবলম্বী জীবিকা যাপন করতে পারে না। যারা প্রতিবন্ধীদের সীমাহীন দুঃখ-দুর্দশা উপলব্ধি করতে পারেন তারাই বুঝে তাদের কষ্ট গাঁথা জীবন। এজন্যই প্রতিবন্ধীদের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা, দয়া-মায়া, সেবা-যতœ, সুযোগ-সুবিধা ও সাহায্য-সহৃদয় তার হাত সম্প্রসারিত করা ইসলামের অনুসারীদের অবশ্যকর্তব্য। মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার ন্যূনতম মৌলিক অধিকারগুলো তাদেরও ন্যায্যপ্রাপ্য। তাই প্রতিবন্ধীদের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা প্রদর্শন ও সহানুভূতিশীল হওয়া অত্যাবশ্যক।
সবারই প্রতিবন্ধীদের অধিকারের প্রতি বিশেষভাবে নজর দেওয়ার দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। তাই মানবিক কারনে তাকে বা তার পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতার হাত প্রসারিত করলে উপকৃত হবে বলে সে জানায়।