মতলব দক্ষিণ ব্যুরো
মতলব দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য এম রফিকুল ইসলামের এপিএস খবির হোসেন জনি হত্যাকাণ্ডের আজ (৪ সেপ্টেম্বর) ১০ বছর অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডের বিচারকার্য আজো শেষ হয়নি।
বিগত ২০১২ সালের আজকের এই দিনে ঢাকা গ্রীন লাইফ হসপিটাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় খবির হোসেন। মতলব দক্ষিণ থানা সংলগ্ন সরকারি একটি জায়গা লিজ নেয়া এবং ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ওই সময়কালে নিজ দলীয় লোকদের মধ্যে আভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি হয়। সে কোন্দলের বলি হয় যুবলীগ নেতা ও সাবেক এমপি এম রফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত এপিএস খবির হোসেন।
২০১২ সালের ২৯ আগস্ট রাত আনুমানিক ১১টায় নওগাঁও গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে স্থানীয় যুবলীগ নেতা বারেককে সাথে নিয়ে খবির হোসেন মতলবের উদ্দেশে রওয়ানা হয়। মতলব বাজারের দক্ষিণ কলাদী টিএন্ডটি এলাকায় আসলে দুষ্কৃতকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে খবিরের মাথার পিছন দিকে আঘাত করে। একপর্যায়ে খবির হোসেন রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে এবং সাথে থাকা বারেক জীবন রক্ষার্থে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। খবিরের আর্তচিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রথমে মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। খবির হোসেনের আত্মীয়-স্বজনরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা গ্রীণ লাইফ হসপিটাল আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ৩ দিন পর ওই হসপিটালে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় খবির হোসেনের বড় ভাই মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে মতলব দক্ষিণ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। তখন ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাটোয়ারী। তিনি এ ঘটনায় প্রায় ১৫ জনকে গ্রেফতার করেন এবং কয়েকজনকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তন্মোধ্য কয়েকজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাহসিকতার সাথে ১০ মাসের মধ্যে ১১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট করে আদালতে দাখিল করেন। এদিকে মামলার সব আসামি বর্তমানে জামিনে রয়েছে।
খবির হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন বলেন, খবির হোসেনকে হত্যা করার পর কয়েক ৪/৫ মাস দলীয় লোকজন খোঁজখবর নিলেও পরবর্তীতে কেউই আমাদের খবরা-খবর নিচ্ছে না। বর্তমানে আমার বড় মেয়ে ফাহমিদা হোসেন উম্মি ইডেন কলেজে অনার্স ২য় বর্ষে অধ্যয়ন করছে এবং ছোট মেয়ে ফারহানা হোসেন তাহা ৩য় শ্রেণিতে পড়ছে। তাদের নিয়ে কিভাবে আছি, কেউই খবর নিচ্ছে না। এছাড়া মামলার বিষয়েও কেউ কোন ধরনের সহযোগিতা করেনি।
খবির হোসেনের বড় ভাই এবং মামলার বাদী মোশাররফ হোসেন বলেন, মামলার ৩৮ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ৩১ জনের স্বাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। বাকি ৭ জনের স্বাক্ষী শীঘ্রই নিবে আদালত।
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২।