মতলবে শিক্ষক লাঞ্ছিত

মাহফুজ মল্লিক
আশুলিয়ায় প্রভাষক হত্যা ও মির্জাপুরে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত হওয়ার রেশ না কাটতেই এবার মতলবে শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটেছে। মতলব দক্ষিণ উপজেলায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বরদিয়া কাজী সুলতান উচ্চ বিদ্যালয়ের এক খন্ডকালীন শিক্ষক ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী দ্বারা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর বিদ্যালয়টির নবম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস চলাকালে শ্রেণিকক্ষে ঘটনাটি ঘটে। এ ব্যাপারে ওই শিক্ষক ওই দিন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
শিক্ষকের নাম চয়ন মজুমদার। তিনি বিদ্যালয়টির ইংরেজি বিষয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক। তাঁর বাড়ি চাঁদপুর শহরের গুয়াখোলা রো এলাকায়। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বাড়ি উপজেলার বরদিয়া এলাকায়। তার বাবা ওই বিদ্যালয়ের সামনে চা-বিস্কুট বিক্রেতা।
শিক্ষক চয়ন মজুমদার বলেন, গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজি বিষয়ের ওপর পাঠদান করছিলেন। এ সময় ওই শিক্ষার্থী শ্রেণি কক্ষে তাঁর সঙ্গে অবাধ্য আচরণ ও বেয়াদবি করলে তিনি তাকে মৌখিকভাবে শাসন করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষার্থী টেবিল থেকে উঠে সকল শিক্ষার্থীর সামেন শারীরিকভাবে তাঁকে (শিক্ষক) লাঞ্ছিত করে দৌঁড়ে পালিয়ে যান। পরে তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে গোপনীয়ভাবে সমাধানের জন্য বৈঠকে বসেন। তবে বিষয়টি পুলিশ বা প্রশাসনের কাউকে জানাননি।
বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৪/৫ জন শিক্ষার্থী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্যারকে লাঞ্ছিত করার পর থেকে সে বিদ্যালয়ে আসছে না। আমরা এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার চাই।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থী এ ঘটনার পর থেকে গাঢাকা দিয়েছেন। তাই তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার বাবার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগটি বন্ধ পাওয়া যায়নি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ওই শিক্ষক ঘটনাটির বিচার চেয়ে তাঁর কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি সুরাহার জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের নিয়ে এখন সভা করছেন। স্থানীয়ভাবেই এটি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিম খান বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন না এবং কেউ জানায়নি। খোঁজখবর নেয়ার চেষ্টা করছি।
মতলব দক্ষিণ থানার ওসি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, বিষয়টি তিনি আজ জেনেছেন। পরে বিদ্যালয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। শিক্ষার্থীর অপরাধের কারণে তাকে বিদ্যালয় থেকে টিসি দিয়েছে পরিচালনা কমিটি।

৩ জুলাই, ২০২২।