হাইমচরে পারুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ

 

সাহেদ হোসেন দিপু

হাইমচর উপজেলার পশ্চিম চরকৃষ্ণপুর গ্রামের পারুল বেগমকে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। শাশুড়ি, ননদ এবং জামাই যৌথভাবে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখেছেন পারুল বেগমকে- এমনটাই অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসীসহ নিহত পারুলের পরিবার।

গত কয়েকদিন আগে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় মিয়া নেপালের স্ত্রী ৪ সন্তানের মা পারুল বেগমকে। পারুলের মৃত্যুটি অনেকেই আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিলেও এলাকাবাসী তা মানতে রাজি নন। এলাকাবাসীর দাবি মিয়া নেপাল একজন নারী লোভী পুরুষ। তার সাথে তাল মিলিয়ে তার মা-বোনও পাল্লা দিয়ে নির্যাতন করতেন পারুল বেগমকে। সন্তানদের দিকে তাকিয়ে সব অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেও বুকে পাথর বেঁধে ছিলেন পারুল। বাবার বাড়ির সহযোগিতায় ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোনরকম জীবন কাটিয়ে ছিলেন নিহত পারুল। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে ঠান্ডা মাথায় রাতের আঁধারে পারুলকে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখেছেন তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। পারুল হত্যাকে ধামাচাপা দিতে স্বামী মিয়া নেপালকে থানায় আত্মসমর্পণ করিয়েছেন কতিপয় প্রভাবশালী লোকজন। মিয়া নেপালের মা এবং বোনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

নিহত পারুলের ছেলে শাহাদাত জানান, আমি প্রতিদিন রাতে আমার মায়ের সাথে ঘুমাতাম। সেদিন রাতে আমার বাবা আমাকে আমার দাদির ঘরে পাঠিয়ে দেয়। রাতে আমার দাদী অনেকখন ঘরের বাইরে ছিলেন। রাতে ক্লান্ত অবস্থায় ঘরে আসলে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি কোথায় গিয়েছিল, আমার দাদী আমাকে বলে আমি পান খাইতে পাশের বাড়ি গিয়েছিলাম। ঐ রাতেই শুনি আমার মা নাকি ফাঁসি দিয়েছে। আমার মা আত্মহত্যা করেনি, মাকে তারা মেরে ফেলেছে।

নিহত পারুলের ভাই রাসেল জানান, আমার বোনকে তারা সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তারা বোনের গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখে। আমার বোনের উপর তার জামাই, শাশুড়ি এবং ননদ বিভিন্ন সময়ে অত্যাচার করতো। বোন নিহত হওয়ার আগের দিনও তার স্বামী তাকে মারধর করেছে, এটা এলাকার অনেকেই জানে। আমার বোন অনেক কষ্ট সহ্য করে বেঁচে ছিল। সে কোনভাবেই এ সন্তানদের রেখে আত্মহত্যা করবে না। তাকে নিশ্চই তারা হত্যা করেছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আমার বোনের হত্যার বিচার সুনিশ্চিত করতে আমি চাঁদপুরের পুলিশ সুপারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০।