হাজীগঞ্জে সরকারি খাল থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলন

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে সরকারি খাল দখল করে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড নাছিরপুর গ্রামের পন্ডিত বাড়ির পশ্চিম পাশে গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের মৈশামূড়া মৌজার কোদালিয়া নামক সরকারি খাল থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে গত কয়েকদিন যাবৎ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে খালের পাড় ভেঙে পড়ছে এবং ঝুঁকির মুখে পড়েছে পাশের কৃষি জমি।
সম্প্রতি সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে জানা যায়, গত কয়েকদিন যাবৎ কোদালিয়া সরকারি খাল থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলন করছেন নাছিরপুর গ্রামের পন্ডিত বাড়ির আব্দুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। তিনি তার জমিসহ মৈশামূড়া গ্রামের অপর এক ব্যক্তির জমি ভরাট করছেন। আব্দুর রহমান ওই ইউনিয়নের মাসুম নামের এক ব্যক্তি কাছ থেকে ড্রেজার কন্ট্রাক্ট করে সরকারি খাল থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন করছেন।
এদিকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা সরকারি খাল থেকে গভীর করে বালু ও মাটি উত্তোলন করায় খালের পাড় ভেঙে কৃষি জমিগুলো এখন ভাঙনের মুখে পড়েছে। এতে করে জমি নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন খালপাড় সংলগ্ন জমির অনেক কৃষক। খালপাড় সংলগ্ন অনেক জমি সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যদের হওয়ায় তারা ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না।
এ বিষয়ে আব্দুর রহমান জানান, তিনি তার নিজের জমি থেকে মাটি ও বালু উত্তোলন করছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার জমি খালের ১৫ হাত ভিতরে আছে। তাই আমি খালে ড্রেজার বসিয়েছি। অন্যের জমি ক্ষতির বিষয়ে তিনি বলেন, পাশের জমির মালিকদের সাথে স্ট্যাম্প করা হয়েছে। যদি তাদের জমির কোন ক্ষতি হয়, তাহলে আমি ক্ষতিপূরণ দিবো।
ড্রেজারের পরিচালক মাসুমের সাথে ড্রেজার শ্রমিক নূরে আলমের মূঠোফোনের মাধ্যমে কথা হলে তিনি বলেন, আমি আপনাদের (সংবাদকর্মী) সাথে দেখা করবো।
গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র দে বলেন, আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাবো।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্র সেচ) ও উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য সচিব মো. মামুন রশিদ জানান, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। তিনি বলেন, অনুমতি ছাড়া কেউ সরকারি খাল থেকে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে মাটি বা বালু উত্তোলন করতে পারে না। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা জানান, বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া বলেন, অভিযোগ পেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১।