অ্যাড. হুমায়ুন কবির সুমনের সংবাদ সম্মেলন

কর্মী ও সমর্থকদের প্রাণনাশের হুমকি ও পোস্টার-ব্যানার ছেড়ার প্রতিবাদে

স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাড. হুমায়ুন কবির সুমন সাংবাদিক সম্মেলন করেছে। রোববার (২০ মে) চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাড. হুমায়ুন কবির সুমন।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে ঘোড়া মার্কা নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। বর্তমান মাননীয় মন্ত্রী যখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন তখন আমি মন্ত্রীর এপিএস হিসাবে সততা, নিষ্ঠা ও মন্ত্রীর স্নেহের সাথে দায়িত্ব পালন করি এবং অদ্যাবধি মন্ত্রীর স্নেহভাজন হয়ে রাজনীতি করে যাচ্ছি। আমি বর্তমানে চাঁদপুর সদর উপজেলার যুবলীগের আহ্বায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছি। কিন্তু আমি ছাত্র অবস্থা থেকেই তৃণমূল রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। আমি চাঁদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সম্মানিত সদস্য ছিলাম। আমার নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকে চাঁদপুর সদর উপজেলাবাসীর কাছ থেকে যে ভালবাসা, আন্তরিকতা ও স্নেহ পেয়েছি তা আমার মত একজন ক্ষুদ্র রাজনৈতিক কর্মীর কাছে অনেক মূল্যবান। চাঁদপুর সদর উপজেলাবাসীর এই ভালবাসা, আন্তরিকতা ও স্নেহ আমাকে উৎসাহিত ও অনুপ্রানিত করেছে।
হুমায়ুন কবির সুমন বলেন, চাঁদপুর সদর উপজেলাবাসীর আমার প্রতি এই উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দেখে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে তার চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভায় আমার কর্মী ও সমর্থকদের প্রান নাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আমার পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে ক্ষতিসাধন করার পরেও আমি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি।
তিনি বলেন, গত ১৩ মে চাঁদপুর সদর-হাইমচর আসনের সংসদ সদস্য ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী আপনাদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে দল থেকে আমাদের দলীয় কোন প্রতীক দেওয়া হয়নি। দলীয় কোন মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এমনকি দলীয় কোন সমর্থনও কাউকে দেওয়া হয়নি। সুষ্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মন্ত্রী এমপি যারা তারা এই পক্রিয়ার মধ্যে অন্যায় কোন হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। তারা কোন ধরনের প্রভাব বিস্তার করবে না। যারা দাঁড়িয়েছেন তারা সকলেই একই আদর্শের মানুষ, দিন শেষে আবার অন্য কোন নির্বাচনে সকলেই এক পক্ষ হয়ে কাজ করবে।
কিন্তু আমার প্রতিদ্বন্ধী দোয়াত কলম প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী চাঁদপুর সদর-হাইমচর সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য ও সমাজকল্যাণমন্ত্রীর নাম পদ মর্যাদা ব্যবহার করে ভোটারদের নিকট ভোট চাচ্ছেন এবং মন্ত্রী থেকে ভোটারদেরকে স্বার্থ পাইয়ে দেবার প্রলোভন দিচ্ছেন। নির্বাচনী মনোয়নপত্র দাখিল থেকে শুরু করে অদ্যাবধি মন্ত্রীর চাঁদপুর পৌরসভাধীন কদমতলাস্থ বাসভবন আমার প্রতিদ্বন্ধী চেয়ারম্যান প্রার্থী (দোয়াত কলম) তার নির্বাচন পরিচালনার প্রধান কেন্দ্র বিন্দু হিসাবে ব্যবহার করে আসছেন। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তার প্রতি মন্ত্রীর সমর্থন আছে বলে ভোটারদেরকে বিভ্রান্ত করছেন। সেই সাথে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরন বিধিমালা লঙ্ঘন করে তিনি প্রকাশ্যে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী দোয়াত কলম মার্কার পক্ষে তার সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ডগুলোতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে পৌরসভার ভোটারদের বিভিন্ন লোভ ও উন্নয়নের কথা বলে ভোট চাচ্ছেন। যাহা নির্বাচন আচরন বিধির ২২(১) এর সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। চাঁদপুর পৌরসভায় টঘউচ কর্তৃক পরিচালিত দারিদ্র বিমোচন ও বস্তি উন্নয়ন (ঈউঈ) প্রকল্পের আওতাধীন সুবিধাভোগী ভোটারদেরকে দোয়াত কলম মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। টঘউচ এর পৌরসভার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা দ্বারা সুবিধাভোগীদের আইডি কার্ড ও বিকাশ নম্বর সংগ্রহ করছেন এবং এ প্রকল্পের আওতাধীন দারিদ্র জনগোষ্ঠী যাদের বিকাশ একাউন্ট নেই তাদেরকে বিকাশ একাউন্ট খুলে দিচ্ছেন। টঘউচ জাতিসংঘের আওতাধীন একটি সংস্থা, তাদের মেয়র মহোদয় ব্যবহার করছেন যা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরন বিধিমালা ২২(২) এর সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। আমার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্ধী দোয়াত কলম মার্কা চেয়ারম্যান প্রার্থী মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে, মেয়র তার পদ পদবী ব্যবহার করে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাকে ব্যবহার করায়, ইহাতে প্রতীয়মান হয় যে, দোয়াত কলম মার্কার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী পেশী শক্তি ও কালো টাকা ব্যবহার করবেন।
তিনি আরো বলেন, চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ভাতাভোগীদেরকে দোয়াত কলম মার্কায় ভোট প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন। অন্যথায় ভাতাভোগীদের তাদের প্রাপ্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত করবেন বলে হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। পৌরসভার মেয়র মহোদয় পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দকে এবং পৌরসভা কর্তৃক পরিচালিত বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক-শিক্ষিকাগণকে দোয়াত কলম প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কাজ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন।
আমি যদি নির্বাচিত হতে পারি উপজেলাবাসী একটি কার্যকর ও পরিসেবামূলক উপজেলা পাবে। আমার উপজেলাবাসীর জন্য প্রতিশ্রুতি থাকবে সেবা যাবে বাড়ী। উপজেলা পরিষদ হবে সততা, নিষ্ঠা ও সেবার বাতিঘর। আমি নির্বাচন কার্য শুরু থেকে অদ্যাবধি আপনাদের অকুণ্ঠ সহযোগিতা পেয়ে আসছি। তাই আপনাদের কাছ আমি কৃতজ্ঞ। আপনারা আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবী করে আসছেন। তাহা আমি কৃতজ্ঞচিত্তে সমর্থন করি। আমার নির্বাচন প্রচারনা করতে গিয়ে আমি ভোটারদের মধ্যে যে উৎসাহ, উদ্দীপনা ও স্বত্বস্ফূর্ততা দেখেছি, তা যেন কোন পেশীশক্তি, কালো টাকা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দ্বারা ম্লান না হয়ে যায় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য আপনাদেরকে বিনীত অনুরোধ করছি। নির্বাচনী পরিচালনা কার্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তা প্রশংসনীয়। আমি আপনাদের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনায় দায়িত্বরত সকল কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আবেদন করছি যে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ পদক্ষেপগুলো অব্যাহত থাকবে। নির্বাচন পরিচালনার কাজে দায়িত্বরত কর্মকর্তাবৃন্দের নিকট নির্বাচনের দিন প্রত্যেক কেন্দ্রে পর্যাপ্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের জন্য আমি আপনাদের মাধ্যমে জোর দাবী জানাচ্ছি। পরিশেষে বলতে চাই, নির্বাচনে সকল প্রার্থীদের জন্য সমান সুযোগ ও সমান অধিকার বজায় রেখে চাঁদপুর উপজেলাবাসীর জন্য একটি স্মরনীয় ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিবেন বলেই নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমার বিশ্বাস। গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অপরিহার্য, অবশ্যই গণতন্ত্রের বিজয় হবে বলে বিশ্বাস করি ইনশাল্লাহ।
চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্তর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রোটা. মাহবুবুর রহমান সুমনের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শহীদ পাটওয়ারী, জালাল চৌধুরী, শরীফ চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন মিলন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, সোহেল রুশদী ও আল ইমরান শোভন, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশসহ জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক, অনলাইন এবং টেলিভিশনের বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকরা।

২০ মে, ২০২৪।