‘স্বপ্ন’ প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প
…..আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান
এস এম সোহেল
উৎপাদনশীল ও সম্ভাবনাময় কর্মের সুযোগ গ্রহণে নারীর সামর্থ্য উন্নয়ন (স্বপ্ন-২য় পর্যায়) অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম-সচিব ও জাতীয় প্রকল্প পরিচালক (স্বপ্ন-২য় পর্যায়) আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, চাঁদপুরের মানুষ অনেক বুদ্ধিমান ও মেধাবী। এখানকার মাটি ও বাতাস অনেক উর্বর। চাঁদপুরের মানুষ অনেক আত্মবিশ্বাসী। তারা মানুষকে যথাযথ সম্মান দিতে জানে। তাদের কাজ তারা আদায় করে নিতে জানে। আপনাদের এলাকায় স্বপ্ন প্রকল্প শুরু হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করতে হবে আপনাদের। এ প্রকল্পের সার্থকতা নির্ভর করবে উপকারভোগী সঠিকভাবে নির্বাচন করতে হবে। তাহলে এই প্রকল্পের সফলতা হবে।
তিনি আরো বলেন, স্বপ্ন প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। এই প্রকল্পের উপকারভোগী শতভাগই হতদরিদ্র নারী। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা করেছিলেন ঘরে ঘরে চাকরি প্রদান করবেন। এই প্রকল্পটি এই প্রকল্পটি শতভাগই হতদরিদ্র নারীদের চাকরি প্রদানের প্রকল্প। উপকারভোগী নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করতে হবে। এর কোন প্রকার ব্যত্যয় হবে না। তিনি আশা প্রকাশ করেন, স্বপ্ন প্রকল্পের ১ম পর্যায় যেভাবে স্বচ্ছতা ও সফলতার সাথে বাস্তবায়িত হয়েছে, ২য় পর্যায় আরোও সফলতার সাথে বাস্তবায়িত হবে এবং কাক্সিক্ষত ফলাফল অর্জিত হবে।
তিনি বলেন, স্বপ্ন প্রকল্প সরকারের, পরিচালনা করবে স্থানীয় সরকার। প্রকৃত উপকারভোগী যেন নির্বাচন করতে হবে। উপকারভোগী নির্বাচন করতে গিয়ে তাদের কাছ থেকে কোন উপকার বা সুবিধা নেওয়া যাবে না। কাজের প্রধান বিষয় হচ্ছে ইমেজ ঠিক রাখা। ১ বছরব্যাপী উপকারভোগীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। প্রত্যেক জায়গায় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সম্পৃক্ত করতে হবে। প্রশিক্ষণ হতে হবে মানসম্মত। চাঁদপুরের মানুষের উদ্ভাবনী ক্ষমতা বেশি।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, নারীদের দিয়ে কাজ করানো এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য নয়। নারীদের আত্মনির্ভরশীল গড়ে তোলাই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। নির্দিষ্ট সময় শেষে একজন নারী বেতন ও সঞ্চয়সহ ৮০ হাজার টাকার মতো পাবে। তাদের সমাজ উন্নয়ন কাজ করকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আমাদের চরাঞ্চলে বিপুল পরিমানে জমি পড়ে রয়েছে। সেখানে চাষাবাদ করার ব্যবস্থা করতে হবে। নারীদের পর্দার পাশাপাশি উৎপাদনশীল ও সম্ভাবনাময় কর্মে নিয়ে আসতে হবে। তাদের কত টাকা মজুরি দেওয়া হচ্ছে সেদিকে না দেখে কর্মদক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। মা-বোনদের স্মার্ট নাগরিক গড়ে তোলতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. নূর হোসেন পাটওয়ারী, ফরিদগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএস তছলিম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাফায়েত আহমেদ সিদ্দিকী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত ও হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা।
কর্মশালার মূল বিষয়বস্তু উপস্থাপনা করেন রিজিওনাল কোর্ডিনেশন এনালিস্ট (স্বপ্ন-২য় পর্যায়) মো. আহমাদুল কবির আকন। প্রকল্পের ১ম পর্যায়ের ফলাফলের উপর একটি ডকুমেন্ট্রি উপস্থাপন করেন স্বপ্ন-২য় পর্যায় প্রকল্পের চাঁদপুর জেলার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুম মিয়া।
কর্মশালায় উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনা বেগম, মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মিজান, ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ, বালিথুবা ইউপি সচিব সুলতান মাহমুদ, বিল্লাল হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইয়াছিন আরাফাত, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রোটারিয়ান মাহবুবুর রহমান সুমন, মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একি মিত্র চাকমা, ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরি মন্ডল, এনজিও ‘ইসপা’র পরিচালক নাসিম বানু শ্যামলী, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান মাজুদা বেগম, হাইমচর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান শাহানাজ বেগমসহ আরো অনেক।
কর্মশালায় চাঁদপুর জেলার ৩টি উপজেলাধীন (ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর ও হাইমচর) উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা), ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের সচিব, এনজিও প্রতিনিধি, সহযোগী সংস্থার কর্মকর্তা, জেলা পর্যায়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধান, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪।