নৌ-বন্দর কর্মকর্তার রহস্যজনক আচরণে
স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুর নৌ-বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকের রহস্যজনক আচরণের কারণে ২টি লঞ্চের স্থানীয় ঘাট সুপারভাইজারদের সাথে যে কোনো মুহূর্তেই রক্তক্ষীয় সংঘর্ষের আশংকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের লিখিত এবং স্বাক্ষরিত কাগজে চাঁদপুর বড়স্টেশন লঞ্চঘাটে এমভি আঁচল ও এমভি আব-এ-জমজম লঞ্চের যে ভার্জিং সময় দেয়া রয়েছে তা চাঁদপুর ঘাটে আব-এ-জমজম লঞ্চ কর্তৃপক্ষ না মেনে নিয়ম বহিঃর্ভূতভাবে আরো বেশি সময় আগেই ঘাটে ভিড়ানোকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে এ ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু চাঁদপুর নৌ-বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক এ বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান যে কোনো মুহূর্তেই দিতে পারেন। তিনি তা না করে রহস্যজনকভাবে তা এড়িয়ে চলছেন।
জানা যায়, যাত্রীবাহি এমভি আঁচল নামক লঞ্চটি চাঁদপুর লঞ্চঘাটে ভাজিং সময় বা ঘাটে নোঙ্গর করার সময় হচ্ছে ১১টা ৫০ মিনিট আর এই ঘাট থেকে এই লঞ্চটি ছেড়ে যাবে ১২টা ২৫ মিনিটে। আর আব-এ-জমজম লঞ্চটি এ ঘাটে ভাজিং সময় বা নঙ্গর করার সময় হচ্ছে ১২টা ৩০ মিনিট আর ঘাট থেকে যাবে বেলা ১টায়। এটি নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের লিখিত ও স্বাক্ষরিত সময়সূচী। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এই সময়কে তোয়াক্কা না করে আব-এ-জমজম লঞ্চটি চাঁদপুর ঘাটে রাখে ১২টা বাজার আগেই অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ে প্রায় আধা ঘণ্টা আগেই এমভি আঁচল লঞ্চটি পন্টুনের যে স্থানে ভিড়ানোর কথা সে স্থানে এসে আব-এ-জমজম লঞ্চটি নোঙ্গর করেন। যার ফলে ঐ স্থানে এসে এমভি আঁচল লঞ্চটি না ভিড়ানোর ফলে তারা এ বিষয়ে আব-এ-জমজম কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে কোন সুরাহ না পাওয়ায় নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর চাঁদপুরের দায়িত্বে নিয়োজিত নৌ-বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকের শ্মরণাপন্ন হন। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে কোনো সুষ্ঠু সমাধান না দিয়ে এড়িয়ে চলছেন। যে কারণে এমভি আঁচল লঞ্চটি যাত্রী না থাকার কারণে দীর্ঘদিন যাবত চাঁদপুর ঘাটে অবস্থান করছেন। এতে করে আঁচল লঞ্চ কর্তৃপক্ষ অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন হচ্ছে।
এদিকে গতকাল বুধবার আঁচল লঞ্চ কর্তৃপক্ষ নৌ-বন্দর কর্মকর্তাকে অবহিত করে ঘাটে লঞ্চ ভিড়ানোর চেষ্টা করলে আব-এ-জমজম লঞ্চের ঘাট সুপারভাইজার শওকত আলী বেপারীর নেতৃত্বে তা বাঁধা দেয়া হয়। এক পর্যায়ে ঘাট সুপারভাইজার শওকত আলী বেপারী পেশীশক্তির অপব্যবহার করে প্রায় শতাধিক বহিরাগত লোকজন নিয়ে ঘাটে আঁচল লঞ্চের সুপারভাইজার শাহ আলম মিজিসহ লঞ্চের কর্মচারীদের উপর হামলা চালানো চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে দু’গ্রুপের লোকজনের সাথে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে নৌ-পুলিশের অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে একদল পুলিশ দু’গ্রুপকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। এর পর-পরই আঁচল লঞ্চটি যাত্রীবিহীন অবস্থায় চাঁদপুর থেকে ঢাকা চলে যায়। অপরদিকে এমভি আব-এ-জমজম লঞ্চটি বিপুল পরিমাণ যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর ঘাট ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর নৌ-বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমি বিষয়টি সম্পর্কে জানি। আমি অসুস্থতার কারণে ঢাকা অবস্থান করছি। বিষয়টি টিআই মাহাতাবকে বলেছি, তিনি বিষয়টি দেখবেন।
টিআই মাহাতাব জানান, সুনির্দিষ্ট কোন নির্দেশনা না থাকার কারণে আমি বিষয়টি সমাধানের কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না।
এ বিষয়ে আঁচল লঞ্চের ঘাট সুপারভাইজার কালু মিজি জানান, বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত চাঁদপুর নৌ-বন্দর কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান দেননি। তাছাড়া ঘাট আব-এ-জমজমের ঘাট সুপারভাইজার শওকত আলী বেপারীর এ ধরনের পেশীশক্তি ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের বিষয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া তার ছেলেদের বিভিন্ন অপকর্মের বিষয়ে স্থানীয়রা জানেন। তারা নিয়মের মধ্যে নয় অনিয়মের মধ্যে এবং পেশীশক্তি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে কাজ করতে চায়, আমি সুষ্ঠু সমাধান চাই।
এ বিষয়ে আব-এ-জমজম কর্তৃপক্ষের বক্তব্যের জন্য মুঠোফোনসহ বার-বার চেষ্টা করেও তারা তাদের বক্তব্য দিতে অপরাগত প্রকাশ করেন।