বালিয়ায় রাতের আঁধারে বসতঘরে আগুন

আল আমিন ছৈয়াল
চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের উত্তর সাপদী মৃধা বাড়িতে মো. শাহজাহান মৃধার বসতঘরে আগুনে মালামালসহ সব আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। গত সোমবার দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টায় এ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
প্রতিবেশী বিল্লাল গাজী, মোক্তার শেখ, শামিম খান বলেন, সোমবার গভীর রাতে সবাই ঘুমে। আগুনের ধোঁয়ার গন্ধ পেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি শাহাজাহান মৃধার ঘরটিতে দাউ দাউ করে আগুনে পুড়ছে। তখন আমরা ডাক-চিৎকার করি। আশেপাশের মানুষজন এসে যে যার মতো করে আগুন নিভানের চেষ্টা করে। ততোক্ষণে ঘরে থাকা ৩টি খাট, ২টি কেবিনেট, সোফাসেট, ১টি ফ্রিজ, ডেসিং টেবিল, সোকেস, চেয়ার, তোসক, বালিশ, চাদরসহ সব আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে ঘরসহ ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান।
ঘরে থাকা সাথী আক্তার বলেন, ঘটনার দিন আমি সন্ধ্যায় ৭টায় ছেলেকে নিয়ে আমার বাবার বাড়িতে যাই। আর আমি যেখানেই যাই ঘরের বিদ্যুতের স্লুইচ এবং ব্যবহার করা সিলিন্ডার গ্যাস বন্ধ করে যাই। আমাকে প্রতিবেশীরা ফোনে জানালে আমি এসে দেখি আমার সবকিছু পুড়ে শেষ।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাথী আক্তার বলেন, কী করবো, কোথায় যাবো- জানি না। পানি খাওয়ার গ্লাসটা তো থাক দূরের কথা, লবণ রাখার বাটিও পুড়ে ছাই হয়ে গেলো। আমার থাকার ঘর নেই। আমি ১ ছেলেকে নিয়ে আমার মেজো ভাসুরের ঘরে থাকি। আমার স্বামী প্রবাসে থাকে।
সাথী আক্তার আরো বলেন, আমার ভাসুর তার পরিবার-পরিজন নিয়ে দীর্ঘ অনেক বছর ঢাকায় থাকে। সে সুবাদে ঘরটি খালি পড়ে আছে ভেবে আমাদের থাকার জন্য বলছে। তাই আমি আমার ছেলেকে নিয়ে আমার ভাসুরের ঘরে থাকি। আমার সব শেষ, আমি এখন নিঃস্ব হয়ে গেলাম।
এদিকে পুড়ে যাওয়া বসতঘরের মালিক শাহ জাহান মৃধা বলেন, আমি আমার পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকি। বাড়িতে কোন প্রয়োজন হলে বাড়িতে আসি, আবার চলে যাই। ঘটনার দিন ভোরে আমাকে বাড়ির লোকজন ফোনে জানালে আমি এসে দেখি আমার ঘরটি পুড়ে শেষ এবং ঘরে থাকা আসবাবপত্রগুলো পুড়ে ছাই। ঘটনার দিন ঘরে কেউ ছিলো না। এতদিন হয়তো সুযোগ খুঁজছে কখন আমার উপর হামলা করবে আমাকে না পেয়ে আমার বসতঘরটি পরিকল্পিতভাবে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পূর্বের শত্রুতা জের ধরেই এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৬নং ওয়ার্ড মেম্বার মনির হোসেন শেখ আগুন লাগার বিষয়টি স্থানীয়রা জানালে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন। তাৎক্ষনিক ইউপি সচিব তাছলিমা আক্তারকে বিষয়টি জানালে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সান্তনা দেন।
এসময় ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।