মনিরুল ইসলাম মনির
লাকড়ির চুলার ফের কদর বাড়ছে। বিগত বছরগুলোতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ঘরে ঘরে সিলিন্ডার গ্যাসের চুলা জ্বলতে দেখা গেছে। কিন্তু দফায় দফায় গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে বর্তমানে গ্যাসের চুলার ব্যবহার বহুলাংশে কমে গেছে। অধিকাংশ গৃহিনীরা হাতে বানানো চুলা ব্যবহার করছেন, ফিরে গেছেন আগের পদ্ধতিতে।
জানা য়ায়, ৭৫০ টাকার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ১৪৫০ থেকে ১৫০০ টাকায় ঠেকেছে। তাই গ্যাসের চুলার বিকল্প হিসেবে উপজেলার ঘরে ঘরে গৃহিনীরা হাতে বানাচ্ছেন লাকড়ি চুলা। পাশাপাশি অনেকে কিনছেন বিভিন্ন কোম্পানির বানানো ‘বন্ধু চুলা’। হাটে বাজারেও বিক্রি হচ্ছে লাকড়ির চুলা। প্রতিটি লাকড়ি চুলা এখন ৩৫০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাটির চুলা তৈরি করা ঝামেলা তাই বাজার থেকে সিমেন্ট বালুর তৈরি চুলা বিক্রি বেড়েছে কয়েক গুন।
মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজারে সিমেন্টের চুলা বিক্রেতা টিপু সুলতান বলেন, আগে সারাদিন বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে ঘুরে ১ থেকে ২টি চুলা বিক্রি করতাম। এখন ১০ থেকে ১৫টি চুলা বিক্রি করতে পারছি।
এদিকে উপজেলার আধুরভিটি গ্রামের গৃহীনি রোকেয়া বেগম জানান, এতো দামের গ্যাস কিনে আমাদের পক্ষে রান্নাবান্না করা সম্ভব না। তাই কষ্ট করে হলেও নিজের হাতে বানানো লাকড়ির চুলায় রান্না করছি। তাছাড়া হাতে বানানো চুলায় রান্না করতে তেমন লাকড়ির প্রয়োজন হয় না। গ্যাসের চাইতেও খরচ কম।
উপজেলা দশানী এলাকার গৃহিনী জাহানারা বেগম জানান, বাপ দাদার আমল থেকে মাটির চুলায় রান্নাবান্না করছি। জ্বালানি হিসেবে ছিল ঘুটে, পাটখড়ি, বাশের কঞ্চি, গাছের মরা ডাল, খরকুটো আর ঝরা পাতা। পরে আসলো গ্যাসের চুলা। কিন্তু এখন দাম বেশি। তাই আগের লাকড়ির চুলাই ভালো।
এ ব্যাপারে জীবগাঁও জেনারেল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আলী হোসেন জানান, এ উপজেলায় গ্যাস লাইন নেই, এখানে এলপিজি গ্যাস দিয়ে রান্না করা হয়। গ্যাসের সিলেন্ডর কিনে অনেকে গ্যাসের চুলায় রান্না করত। কিন্তু দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ ফের ফিরে যাচ্ছে লাকড়ির চুলায়।
১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।