মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে ৪ মাস বয়সী শিশু শাহরিনকে হত্যার ঘটনায় মা মানসুরা (৩০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (২১ নভেম্বর) সকালে তাকে গ্রেফতার করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মো. নাজিম উদ্দিন। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত শিশুর ফুফু হালিমা বেগম বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আটক মানসুরাকে একই দিন (সোমবার) আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। তিনি উপজেলার হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামের মিজি বাড়ির প্রবাসী ফারুক হোসেন মিয়াজীর স্ত্রী ও হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৫নং ওয়ার্ড মকিমাবাদ গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে। এর আগে গত ৬ আগস্ট শিশু শাহরিনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুরের সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, শাহরিনের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে হত্যার আলামত পাওয়ায় শিশুটির মা মানসুরাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। তিনি বলেন, তার (মানসুরা) বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, ৪ মাস বয়সী শিশু শাহরিনের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার খবর পেয়ে গত ৬ আগস্ট শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ। এর আগেরদিন শনিবার (৫ আগস্ট) রাতের কোন এক সময় উপজেলার হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামের মিজি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটি ওই বাড়ির প্রবাসী ফারুক হোসেন মিয়াজির একমাত্র মেয়ে।
ওই সময়ে শিশু শাহরিনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রবাসী বাবা ও পরিবারের সদস্যরা রহস্যজনক বলে মনে করেন। তবে শিশুটির বাবার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ সংবাদকর্মীদের কাছে আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তারা মেডিকেল রিপোর্ট (ময়নাতদন্ত) পুলিশের তদন্তের উপর বিষয়টি ছেড়ে দেন। তখন লোকমুখে শুনা গেছে, শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে, আবার কেউ বলছেন, ব্রেনস্ট্রোক বা হার্টএ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে?
এদিকে হত্যাকান্ডের শিকার শিশু শাহরিনের মা মানসুরার দ্বিতীয় স্বামীর ঘরের প্রথম সন্তান। তার প্রথম স্বামীর ঘরেও একটি সন্তান রয়েছে। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে তিনি প্রবাসী স্বামী ফারুক হোসেন মিয়াজীর বাড়ি বাড্ডা গ্রামের মিয়াজী বাড়িতে বসবাস করতেন।
এ বিষয়ে মানসুরা সংবাদকর্মীদের বলেন, আমি আমার সন্তানকে কেনো হত্যা করবো? ওইদিন রাতে আমি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে বাথরুমে বসেই শাহরিনের কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই। পরে দ্রুত ঘরে এসে তাকে কোলে তুলে দুধ দেই। কিন্তু সে দুধ মুখে নেয় না এবং নড়াচড়াও করে না।
তিনি আরো বলেন, আমার ননদরাই কেউ তাকে মেরে আমাকে ফাঁসাতে চাইছে। কারণ, বিয়ের পর থেকেই তারা আমাকে মেনে নিতে পারেনি। সবসময় আমাকে মানসিক নির্যাতন করে আসছে।
২৩ নভেম্বর, ২০২২।