১৮তম এশিয়ান ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টস ফোরাম শুরু

ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আয়োজনে এবং বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সহযোগিতায় বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৮তম এশিয়ান ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টস ফোরাম-২০১৯ (এইউপিএফ-২০১৯)। গতকাল শনিবার রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে সকাল ১০টায় এইউপিএফ-২০১৯ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এইউপিএফ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে যা নিঃসন্দেহে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি বিশেষ সুযোগ। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের মধ্যে জ্ঞান বিনিময় করতে পারবে। এ সময় তিনি এইউপিএফ আয়োজন করার জন্য ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যুগপোযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে উল্লেখ করে ডা. দীপু মনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ চাকরির বাজারের উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে পারছে না। নিযোগদাতারা অভিযোগ করেন যে, তারা দক্ষ কর্মী পাচ্ছেন না। এ সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
ডা. দীপু মনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এখন জনমিতির সুবিধা ভোগ করছে। এই সুবিধা পুরোপুরি কাজে লাগাতে হলে তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ সময় তিনি তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ল্ড বিজনেস এনজেলস্ ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের চেয়ারম্যান বেইবার্স আলতুনতাস। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান, এইউপিএফ’র পক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ার দং সিউ ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ড. জেককি চ্যাং ও এইউপিএফ-২০১৯ এর আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম মাহাবুব-ঊল হক মজুমদার প্রমুখ।
‘উদ্যোক্তা শিক্ষার ভবিষ্যৎ ও অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানঃ এশিয়ার অর্থনীতিতে সফল উদ্যোক্তা উন্নয়নের পরিবেশ তৈরীর নিয়ামকসমূহ’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত এ ফোরামে বাংলাদেশসহ এশিয়ার ১৫টি দেশের ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট, ভাইস চ্যান্সেলর ও র‌্যাক্টররা অংশগ্রহণ করেন। তিন দিনব্যাপী এ ফোরামে রয়েছে প্রবন্ধ উপস্থাপন, প্যানেল ডিসকাশন, সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা ও পরবর্তী আয়োজক বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে এইউপিএফ’র পতাকা হস্তান্তর।
স্বাগত বক্তব্যে ড. মো. সবুর খান বলেন, বাংলাদেশে এখন শতাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে প্রায় অর্ধ শতাধিক। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে এক ধরনের বিপ্লব চলছে এখন। এই সময় সবচেয়ে গুরুত্ব আরোপ করা উচিত গুণগত শিক্ষার উপর। এইউপিএফ এমন একটি সংগঠন যেটি উচ্চশিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে কাজ করে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এইউপিএফ সম্মেলন আয়োজন করতে পেরে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় গর্বিত বলে জানান তিনি।
এবারের এইউপিএফ-এর মূল প্রতিপাদ্য উল্লেখ করে ড. মো. সবুর খান আরো বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোক্তা তৈরি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশে প্রথবারের মতো ইনোভেশন অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনারশিপ বিভাগ চালু করেছে ড্যাফোডিল। শুধু তাই নয়, উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদেরকে শতভাগ পর্যন্ত বৃত্তি দেয় ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়। এ সময় তিনি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করেন।
চীন ও থাইল্যান্ডের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক থেকে ১৯৯৯ সালে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্ট ফোরাম (এইউপিএফ) যাত্রা শুরু করে। দেশ দুটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রেসিডেন্টরা যাতে সহজেই নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন তথ্য ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারেন এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশে সিনো-থাই হায়ার এডুকেশন ইনস্টিটিউশনে একটি সম্মেলন করার জন্য থাইল্যান্ডের গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজ, চাওশান কলেজ, শ্রীনাখারিনউইরট ইউনিভার্সিটি ও সিয়ামস ইউনিভার্সিটি সম্মিলিতভাবে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে। সেই থেকে প্রস্তাবিত সম্মেলনটি প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় এবং এর মাধ্যমে সমগ্র এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রেসিডেন্টদের অন্তর্ভূক্ত করার চেষ্টা করা হয়।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ২০১২ সাল থেকে এইউপিএফ’র কার্যক্রমে যুক্ত হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান বর্তমানে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টস ফোরামের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য।