স্টাফ রিপোর্টার
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মুহম্মদ শফিকুর রহমান বলেছেন, ২০২১ সাল হচ্ছে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং ২০২০ সাল হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর বছর। আর বাঙালি জাতির জীবনে অতীব গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এ দু’টি অধ্যায়। তাই আমি কোনো রাজাকার বা রাজাকারের পৃষ্ঠপোষকের অধীনে (ক্ষমতায় থাকা) জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপন করতে পারবো না। তিনি আগামি ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব প্রসঙ্গে এ কথা বলেন।
তিনি এ নির্বাচনের গুরুত্বকে আরো বিশদভাবে তুলে ধরে বলেন, এ নির্বাচনটি একটি চ্যালেঞ্জ। দেশের চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে কি থাকবে না সেটা এ নির্বাচনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে। মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হবে কি হবে না তা ঠিক হবে এ নির্বাচনে। জঙ্গিবাদ এখনো পুরোপুরি নিরসন হয়নি। তাই আগামির বাংলাদেশ কি সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও স্বাধীনতাবিরোধীদের বাংলাদেশ হবে, নাকি এসব নির্মূল করে একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে সে সিদ্ধান্ত নেয়ার নির্বাচন হচ্ছে আগামি ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আরো এক যুগ করলেও শেষ হবে না। এ ধারা অব্যাহত থাকবে কি থাকবে না সে সিদ্ধান্ত হবে এ নির্বাচনে। তাই আমাদের এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে আগামি ৩০ ডিসেম্বর ভোটটি জায়গা মতো দিতে হবে।
তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার চাঁদপুর প্রেসক্লাবে তাঁর নিজ উদ্যোগে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ বক্তব্য রাখেন।
সাংবাদিক মুহম্মদ সফিকুর রহমান আরো বলেন, আওয়ামী লীগে ধর্ম আছে, ধর্মের ব্যবসা নেই। ইসলাম এবং নবী করিম (দ.)-এর অনেক নীতি অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ চলে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি একটি চক্রান্তের কাছে হেরে গেছেন উল্লেখ করে বলেন, তারপরও আমি তখনকার এমপি লায়ন হারুনুর রশিদকে বলেছি, ফরিদগঞ্জের উন্নয়নে আমার যে কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন মনে করলে আমাকে বলবেন, আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। কিন্তু তিনি সেই পাঁচ বছর একটিবারের জন্যেও আমার সাথে ফরিদগঞ্জের কোনো বিষয়ে কথা বলেননি। তারপরও আমি ফরিদগঞ্জের উন্নয়ন তথা জনগণ থেকে দূরে সরে যাইনি। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, ফরিদগঞ্জের বেইলি ব্রিজের স্থলে পাকা সেতু আমি করে দিয়েছি। সাড়ে ৩শ’ ছেলে মেয়েকে চাকরি দিয়েছি। ত্রিশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভবন করে দিয়েছি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমান নির্বাচিত হতে পারলে ফরিদগঞ্জের বিষয়ে তিনি অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, আমি ফরিদগঞ্জ থেকে জঙ্গিবাদ ও মাদককে নির্মূল করতে যুদ্ধ ঘোষণা করলাম। বিভিন্ন প্রশ্নের আলোকে তিনি বলেন, ফরিদগঞ্জ আওয়ামী লীগে এখন আর কোনো বিভাজন নেই। দশ বছরে মেঘনা-ডাকাতিয়ার পানি অনেক দূর গড়িয়ে গেছে, অনেক ময়লা আবর্জনা দূর হয়ে গেছে, এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। আমি দুর্বল নই, কেউ আঘাত করলে প্রতিহত করার মতো শক্তি আমার এবং ফরিদগঞ্জ আওয়ামী লীগের আছে। আর ফদিগঞ্জকে বিএনপির ঘাঁটি বলা হয়, এ কথাটি সঠিক নয়। এর সপক্ষে তিনি বিভিন্ন ইতিহাস তুলে ধরেন।
এছাড়া নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে এবং পরিচালনায় সাংবাদিকদের মধ্য থেকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকরাম চৌধুরী, গোলাম কিবরিয়া জীবন, শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, শহীদ পাটোয়ারী, বিএম হান্নান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মিলন, রহিম বাদশা, সোহেল রুশদী, ইন্ডিপেন্ডেট পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি অধ্যাপক দেলোয়ার আহমেদ, প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি আলম পলাশ, দৈনিক মতলবের আলোর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কেএম মাসুদ।
এ সাংবাদিক সম্মেলনে প্রেসক্লাবের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এবং জেলা শহরে কর্মরত সব পর্যায়ের সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।