এসিএম-আইসিপিসি ঢাকা রিজিওনাল ২০১৮ অনুষ্ঠিত

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্বাগতিকতায় এশিয়া অঞ্চলের (ঢাকা সাইট) আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামিং কনটেস্ট আইসিপিসি (ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্ট-২০১৮) গতকাল শনিবার আশুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই এ যাবৎ কালের সর্ববৃহৎ কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। এতে বাংলাদেশের ১০১টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন আইটি ইন্সটিটিউটের ২৯৮টি দল (প্রতিটি দলে ৩জন করে প্রতিযোগী) অংশগ্রহণ করে। এছাড়া নেপাল থেকে ৩টি দল এবারের প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করে। এ প্রতিযোগিতার সেরা ২টি দল আগামি ৩১ মার্চ ও ৫ এপ্রিল ২০১৯ পর্তুগালের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টো’র স্বাগতিকতায় অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ফাইনালস ২০১৯ এর মূল পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আইসটি ডিভিশন ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সহযোগিতায় এবং এডিএন ইডু সাভিসেস ও এসএসএল ওয়ারলেস, বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি ও ইন্টারনেট সোসাইটি (আইসক) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সহ-পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশে পৃথিবীর বৃহত্তর পরিসরে এ মেগা ইভেন্টের আয়োজন করা হয়।
জমকালো এ প্রতিযোগিতার প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আইসিপিসি প্রতিযোগিতাটি আমাদের তরুণদের সামনে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করার এক বিশাল সুযোগ এনে দিয়েছে। অনেকে বলে থাকে, এই প্রতিযোগিতা হচ্ছে, মানুষ ও মেশিনের মধ্যে প্রতিযোগিতা। ব্যক্তিগতভাবে আমি তা মনে করি না। আমি মনে করি, মানুষের চেয়ে মেশিন কখনো উন্নত হতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রযুক্তির উত্থানের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। আর এই প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা হচ্ছে প্রযুক্তির বিপ্লব। এই প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যেসব তরুণ উঠে আসবে তাদের হাত ধরেই ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এসময় অধ্যাপক আব্দুল মান্নান ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ধন্যবাদ দেন এরকম একটি বড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, হাইটেক পার্ক কর্তপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ম্যাডাম হোসনে আরা বেগম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলেরর নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেব, বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি ও ইন্টারনেট সোসাইটি (আইসক) বাংলাদেশ চ্যাপ্টার এর প্রফেসর হাফিজ মো. হাসান বাবু, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ইঞ্জি. এনামুল কবির, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডীন অধ্যাপক আবুল এল হক, সিটিও ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তপন কান্তি সরকার, এসএসএল ওয়ারলেসের চীফ অপারেটিং অফিসার আশিস চক্রবর্তী, চীফ টেকনিক্যাল অফিসার শাহাজাদা রিদওয়ান, ডাটাসফট্ সিস্টেমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহাবুব জামান প্রমুখ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহাবুবুল হক মজুমদারের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন কনটেস্ট ডিরেক্টর অধ্যাপক ড. সৈয়দ আকতার হোসেন, কনটেস্টের প্রধান বিচারক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ প্রমুখ।
এবারের প্রোগ্রামিং কনটেস্টটিকে বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আয়োজকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ছিল এবং এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আগামী ওয়ার্ল্ড ফাইনালে ভাল করার দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করা হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর বলেন, এক সঙ্গে এতো তরুণ প্রতিযোগী দেখে আমি খুবই আনন্দিত। আমার মনে পড়ছে ২০ বছর আগের কথা। তখন এরকম একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু পর্যাপ্ত ল্যাপটপের অভাবে আয়োজনটি মনের মতো করে করতে পারিনি। আজ এই প্রতিযোগিতায় কত ল্যাপটপ রয়েছে গুণে শেষ করা দুষ্কর।
বাংলাদেশের তরুণদেরকে মেধাবী প্রজন্ম উল্লেখ করে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী আরো বলেন, বিশ বছর ধরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে আমি জানি, এই তরুণরা কী পরিমাণ মেধাবী। এই প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা তরুণদের মেধাকে আরো শাণিত করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান বলেন, বর্তমান সময় হচ্ছে প্রযুক্তির সময়। এই সময়ে প্রযুক্তির জ্ঞান থেকে দূরে থাকলে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে হবে। আমরা চাই না আমাদের শিক্ষার্থীরা কোনো প্রতিযাগিতায় পিছিয়ে পড়–ক। এজন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির জ্ঞানে দক্ষ করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।
ড. মো. সবুর খান আরো বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পেরে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অবশ্যই গর্ববোধ করছে। এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে ২৯৮টি দল অংশগ্রহণ করেছে। আগামীতে আইসিপিসির ওয়ার্লন্ড ফাইনাল প্রতিযোগিতা ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান সমকালীন শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে সর্বজন স্বীকৃত আর এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে শুরু থেকেই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আসছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কর্মকা-ে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার নিাশ্চত করেছে যাতে করে শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাকরি বাজারের প্রতিযোগিতায় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পিছনে ফেলে নিজেদের অবস্থানকে সুসংহত করতে পারে। তিনি আরো বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি একটি ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি হিসাবে নিয়মিতভাবে এ ধরনের প্রতিযোগিতা আয়োজন করে আসছে এবং ভবিষ্যতে আরো বড় আয়োজনের পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালযের রয়েছে।
সকাল ১১ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ৫ ঘণ্টা এ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা চলে। এ বছর এসিএম-আইসিপিসি ঢাকা অঞ্চল ২০১৮ ব্যাপক পরিসরে ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। কম্পিউটার প্রোগ্রামিং কনটেস্টের পাশাপাশি এই জমকালো আয়োজনে ছিল টেকনিক্যাল টকস, সিএসআইএস, ফান ইভেন্টস এবং পুরস্কার বিতরণী ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।