গাড়ি উঠলেই কেঁপে ওঠে নারায়ণপুর বোয়ালজুড়ি ব্রিজ

ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

মোজাম্মেল প্রধান হাসিব
মতলব-গৌরীপুর-পেন্নাই সড়কের নারায়ণপুর বাজার সংলগ্ন বোয়ালজুড়ি খালের উপর নির্মিত সরু ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত চলছে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনসহ স্থানীয় লোকজন। সরু এই ব্রিজটির উপর গাড়ি উঠলেই কেঁপে উঠে। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়েই প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীবাহী যানবাহনসহ চলছে ভারি পণ্যবাহী যান।
ব্যস্ততম এ সড়কের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে যানবাহন বেশি চলাচল করায় এবং খাল দিয়ে অবৈধ নৌযান চলাচলের কারণে ব্রিজের পিলারের নিচের মাটি সরে এবং ছাদের ঢালাই খসে পড়ে ব্রিজটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ব্রিজটি ভেঙে পড়ে যে-কোনো সময় ঘটতে পারে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তাই জনগুরুত্বপূর্ণ এ ব্রিজটি প্রশস্ত করে দ্রুত নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি চলাচলকারী যাত্রী সাধারণসহ চালকদের।
প্রায় ৩৫/৪০ বছর আগে মতলব-গৌরীপুর-পেন্নাই সড়কের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর বাজার সংলগ্ন ঐতিহ্যবাহী বোয়ালজুড়ি খালের উপর নির্মিত হয় এই ব্রিজটি। ব্রিজটি নির্মাণের পর থেকে রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রতিদিন চাঁদপুর জেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করছে এ ব্রিজের উপর দিয়ে। ব্যস্ততম এ সড়কের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে যানবাহন বেশি চলাচল করায় ব্রিজের পিলারের নিচের মাটি সরে এবং ছাদের ঢালাই খসে পড়ে ব্রিজটি চলাচলের জন্য এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে ব্রিজের উপর গাড়ি উঠলেই কেপেঁ উঠে ব্রিজটি।
এছাড়া ব্রিজটি সরু হওয়ায় দু’দিক থেকে ছেড়ে আসা যানবাহন ও পথচারীদের পারাপারের সময় যানজট লেগে থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় প্রতিনিয়ত। ব্রিজটির এক প্রান্ত দিয়ে একটি সিএনজি প্রবেশ করলে বিপরীত প্রান্ত থেকে কোনো প্রাইভেটকার, যাত্রীবাহী বাস বা পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে পারে না। ফলে যানজট লেগেই থাকে। ব্রিজটি যখন নির্মিত হয় তখন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা না করে ব্রিজটি নির্মাণের ফলে এমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে যানবাহনের চালক ও যাত্রী সাধারণ।
নারায়ণপুর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী মো. শরীফ বকাউল বলেন, এ ব্রিজটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। তাছাড়া ব্রিজটি সরু হওয়ায় দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় আমাদের।
নারায়ণপুর পপুলার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাঈনুল ইসলাম টিপু জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের উপর দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য ভারি বাস, মালবাহী ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশের পিকআপ, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী বহনকারী গাড়িসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যানবাহন চলাচল করে। এ ছাড়া প্রতিদিন নারায়ণপুর পপুলার উচ্চ বিদ্যালয় ও নারায়ণপুর পপুলার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী এ ব্রিজের উপর দিয়ে যাতায়াত করে। ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ আমরা শিক্ষকরা সবসময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। ব্রিজটি ভেঙে কখন যে কী ঘটনা ঘটে!
এ ব্যাপারে চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামছুদ্দোহা বলেন, নারায়ণপুর বাজারের পশ্চিম পাশ দিয়ে একটি বাইপাস সড়ক হবে। সে অনুযায়ী নতুন ব্রিজ নির্মিত হবে। আমরা ইতোমধ্যে ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) এবং সার্ভে করেছি। ডিপিটিও রেডি করে ফেলছি। ডিজাইনও হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি এক মাসের মধ্যেই এই প্রকল্প শুরু করতে পারব।
যাত্রী সাধারণসহ গাড়ি চালকদের দাবি, জনগুরুত্বপূর্ণ এ ব্রিজটি দ্রুত প্রশস্ত করে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩।