গ্রাম আদালতে অবশ্যই বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে

অতিরিক্ত জেলা জজ মোহাম্মদ সরওয়ার আলম বলেন, গ্রাম আদালত বিচার ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এলাকার ছোট-খাট বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য গ্রাম আদালত কাজ করে। আইন অনুযায়ী দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে গ্রাম আদালত রয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে এখানে মোট ৫ জন বিচারিক প্যানেল সদস্য নিয়ে আদালত গঠিত হয়।

প্রতিটি মামলার ক্ষেত্রে আদালতের বিচারিক পানেলে পক্ষদ্বয়ের মনোনীত দুই জন করে মোট ৪ জন সদস্য থাকেন। নিয়ম অনুযায়ী আদালত গঠনের পর অবশ্যই বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে এবং গ্রাম আদালত আইন ও বিধিমালা মেনে বিচার কার্য পরিচালনা করতে হবে। চাঁদপুর সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত গ্রাম আদালত বিষয়ক রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষণে কথাগুলো বলেন।

অতিরিক্ত জেলা জজ আরো বলেন, গ্রাম আদালত সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ। একে সক্রিয় করতে পারলে আমাদের উচ্চ আদালতে মামলার চাপ কমে যাবে। কিন্তু গ্রাম আদালত সক্রিয় করার পূর্বশর্ত ইউপি চেয়ারম্যান ও তার সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এজন্য এ ধরনের প্রশিক্ষণ আয়োজন করা খুবই প্রয়োজন এবং গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করা দরকার যাতে তারা কখনো বিরোধে জড়িত হলে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে আসে এবং বিচার চাইতে পারে। উভয় পক্ষেরই সক্ষমতা দরকার।

সম্প্রতি আইনমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ৩৪ লাখ মামলা বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট এ বিচারাধীন রয়েছে ৫ লাখ ১৫ হাজার মামলা।

এ প্রেক্ষাপটে গ্রাম আদালত সক্রিয় করতে পারলে ছোট-খাট বহু মামলা স্থানীয়ভাবেই নিস্পত্তি করা যেতো। প্রসঙ্গতঃ উচ্চ আদালতগুলোতে যেসব মামলা বিচারাধীন রয়েছে তার সিংহভাগই গ্রাম আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হোত।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি’র (ইউএনডিপি) সহযোগীতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ২৩-২৪ জুন দুই দিনব্যাপী গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণে কচুয়া ও মতলব-উত্তর উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইউনিয়নের মোট ৩০ জন ইউপি সচিব ও গ্রাম আদালত সহকারীরা অংশগ্রহণ করেন।

জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমানের নেতৃত্বে প্রশিক্ষণে সার্বিক সহযোগিতা করেন গ্রাম আদালতের ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর (ডিএফ) নিকোলাস বিশ্বাস।

প্রশিক্ষণের বিভিন্ন সেশনে যেসব বিষয় উপস্থাপন করা হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি (এডিআর), গ্রাম আদালত আইন ও বিধিমালা, গ্রাম আদালতের ধাপসমূহ, শুদ্ধাচার, মূল্যবোধ ও গ্রাম আদালত, জেন্ডার ও গ্রাম আদালত। প্রশিক্ষণে গ্রাম আদালতের উপর একটি ভিডিও শো প্রদর্শনসহ গ্রাম আদালতের মক-ট্রায়াল করা হয় যেখানে ইউপি সচিব ও আদালত সহকারীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া প্রশিক্ষণে আদালতের নথি লেখার উপর বিশেষ অনুশীলন করা হয়।

স্টাফ রিপোর্টার