এস এম সোহেল
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চাঁদপুর জেলার ৫টি আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার লক্ষ্যে জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় চাঁদপুর ক্লাবে জেলা আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সবার উপস্থিতিতে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি এমপি, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও নৌ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম, কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল প্রমুখ।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, তা শুধু সম্ভব হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার কারণে। জননেত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন, এখন এ দেশে দারিদ্রসীমা কমে এসেছে। আমাদের সমাজে উপরে উঠার সিঁড়ি শিক্ষা। আর এই শিক্ষা প্রভৃতি বিস্তার করছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যে উপবৃত্তি দেয়া হয়, তা বিশে^র কোথাও নেই। এখন দেশে চিকিৎসা সেবা উন্নয়ন হয়েছে। এখন যক্ষা, কলেরা, মরণব্যাধী রোগগুলো এখন কিন্তু নেই। বাংলাদেশের মানুষ এখন গড় আয়ু ৭২ বছরে দাঁড়িয়েছে। দেশের যে কোন উন্নয়ন হয়েছে শুধুমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনা জন্য। তিনি একটি অসম্প্রদায়িক সমাজ গঠন করেছেন। এখানে আমরা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই মিলে সামাজিক কাজ করতে পারি।
তিনি আরো বলেন, চাঁদপুরে যে ৫টি আসন রয়েছে, আমরা এই ৫টি আসনে আবারো নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করবো। শেখ হাসিনা মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী না করলে অন্য কোন বিকল্প নেই। আমরা জনগণের কাছে গিয়ে এই সরকারের উন্নয়নের কথা বলবো। চাঁদপুরে যথাসম্ভব একটি বিজ্ঞান বিশ^বিদ্যালয় চাই। আমরা চাঁদপুরেকে ৩টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চাঁদপুর-লাকসান ডাবল লাইন হিসেবে রূপান্তরিত করতে চাই। এখানে শিল্প এবং সেবার মান গড়ে উঠবে। আমরা জনগণের মাধ্যমে সরকারের কাছে প্রস্তাবগুলো প্রেরণ করতে চাই। আমরা যারা সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে যাচ্ছি আমরা চাঁদপুরে নতুন করে উন্নয়নে বিস্তৃতি করবো। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই ৫ আসনে সবার সম্মিলত প্রচেষ্টা থাকতে হবে।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, আগামি ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ মাসটি বিজয়ের মাস। আমরা বিশ^াস করি ২০০৮ সালে যেভাবে বিজয় অর্জন করেছি, ঠিক ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে পুনরায় আমরা এক ঐতিহসিক বিজয় অর্জন করবো। যখন বাংলাদেশে হাহাকার, খাদ্যাভাব, বিদ্যুৎ ঘাটতি ছিলো, ছিলো না কৃষিতে বিপ্লব, সারাবিশে^ এ দেশটি করুণার পাত্র ছিলো। তখন’ই জননেত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে এই দেশে উন্নয়ন অর্জন হয়েছে। এদেশে যত অর্জন হয়েছে, হয় বঙ্গবন্ধুর হাতে, নাহয় জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে। আমাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তরুণ ভোটারদের এই সরকারের অর্জনগুলো জানাতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এই সরকার নারী ক্ষমতায়নে কাজ করেছে। শুধুমাত্র নৌকার বিজয়ের কারণে এসব সম্ভব হয়েছে। তাই এবারও নৌকার বিজয় আমাদের সুনিশ্চত করতে হবে। আমাদের এক-একজন এমপি’র কিন্তু সবাইকে সন্তুষ্ট করা সম্ভব নয়। এটার জন্য কিন্তু নেতাকর্মীদের কাজ করতে হবে। সততা-নিষ্ঠা এবং আন্তরিকার সাথে ১০টি বছর কাজ করেছি। আমি কি সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পেরেছি। আমি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তা কি রাখতে পেরেছি। আমি শুধু বলবো, পছন্দ-অপছন্দকে বাদ দিয়ে সব দুঃখ-কষ্ট ভুলে আমরা এক হয়ে কাজ করবো। মানুষ হিসেবে আমাদের ভুল-ভ্রান্তি এবং দূরত্ব থাকতে পারে। সবকিছু ভুলেই আমাদের পাশে থাকতে হবে। আসুন আমরা সাবধান হই, কোন তৃতীয় পক্ষ যেনো আমাদের মাঝে বিভ্রান্ত না করতে পারে। আমরা সবার কাছে বন্ধুত্ব ও ঐক্য নিয়ে যেতে যাই। আমি আশা করবো নৌকার কর্মীরা শেখ হাসিনার নৌকা ছাড়া আর অন্যকিছু বুঝবে না। আমরা সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করতে চাই। কারণ শেখ হাসিনার বিকল্প আর কিছু নেই।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ৫ম বারের মত মনোনয়ন দিয়েছেন। বিজয়ের কোন বিকল্প নেই। শেখ হাসিনাকে আরেকবার বাংলার প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। নাহলে দেশের উন্নয়ন স্থবির হয়ে যাবে। চাঁদপুরে ৫টি আসনে আমরা বিজয়ী, এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। নির্বাচনকে ঘিরে কোন নেতাকর্মীদের মাঝে যেনো ক্ষোভ না থাকে। সব দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে আমরা নৌকার পক্ষে কাজ করবো। এ নির্বাচন আমাদের একার নয়, এটি সবার নির্বাচন। আমরা কৌশলী ভূমিকা নিয়ে নির্বাচনে কাজ করবো, আমাদের যা যা করার প্রয়োজন আমরা তাই করবো। প্রয়োজন হলে রক্ত দিয়ে হলেও এই নির্বাচনকে সফল করবো।
সুজিত রায় নন্দী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা চাঁদপুরে যে ৫টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণা করেছেন আমরা সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, সবাই একত্রিত হয়ে নৌকার জন্য কাজ করবো। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য সব কৌশল অবলম্বন করতে হবে। সবাইকে ত্যাগের মহিমা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু একটি কথা মনে রাখতে, শেখ হাসিনার নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। কাউকে কটাক্ষ করা যাবে না, সবাইকে সম্মান করতে হবে। আগামি ৩০ তারিখে নৌকায় ভোট দিয়ে পুনরায় প্রাধানমন্ত্রী বানাবো, এটা হোক আমাদের প্রত্যয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, দল হলো সবচেয়ে বড়। আওয়ামী লীগ সু-সংগঠিত না হলো কোন সফলতা সম্ভব হবে না। মান-অভিমানের কোন স্থান নেই। সবার পছন্দ-অপছন্দ থাকতে পারে। আমরা আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করি। আমাদের আদর্শ হলো সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া। মনে রাখতে হবে দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া যাবে না। আমরা জেলা থেকে মনিটরিং বোর্ড করবো। পরিকল্পনা না করলে সফলতা আসে না। তাই যে কোন কাজে পরিকল্পনা করতে হবে। আমরা সবাই ভাই ভাই, কারো সাথে বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল বলেন, কোন নেতাকর্মীরা কেউ কোন চায়ের দোকানসহ কোন স্থানে কাউকে নিয়ে মন্তব্য করবেন না। কোন মন্তব্য করতে হলে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় আছে। এখানে এসে মন্তব্য ও পরামর্শ দিন। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আবারো জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনবো।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদত তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, শহীর হোসেন পাটওয়ারী ও অ্যাড. মজিবুর রহমান ভূঁইয়ার যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ মো. ইউসুফ গাজী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ আখন্দ, চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক আলী এরশাদ মিয়াজী, পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাধা গোবিন্দ গোপ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান বাবুল, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যাপক ফজলুল হক, হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুর রশিদ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক গাজী মাঈনুদ্দিন, হাজীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আ.স.ম মাহবুব-উল-আলম লিপন, মতলব দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক সিরাজুল মোস্তাফা তালুকদার, মতলব উত্তর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. রুহুল আমিন সরকার, মতলব উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু খায়ের পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার, হাইমচর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতালেব জমাদার, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হাসেন পাটওয়ারী, শাহরাস্তি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মিন্টু, মতলব উত্তর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ কুদ্দুস, কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইয়ুব আলী পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন সোহাগ, জেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন প্রধান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী অধ্যাপিকা মাসুদা নুর খান, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলহাজ মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, জেলা শ্রমিক লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি মাহবুবুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক এস এম জয়নাল আবেদীন, জেলা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী ফরিদা ইলিয়াস, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতাউর রহমান পারভেজ প্রমুখ।