শাহাদাত হোসেন শান্ত :
চাঁদপুরে আবাদি জমি থেকে বর্ষার পানি না সরায় আগাম শীতকালীন সবজি আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি যথাসময়ে সবজি চাষেও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছে সাধারণ কৃষক।
গত বছর এ সময়ে আগাম শীতকালীন সবজি প্রায় বিক্রির উপযোগী হলেও এবছর বীজ বপনই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। একারণে শুধু আগাম সবজি নয় রবি শস্য উৎপাদনে মারাত্মক প্রভাব পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। যার অন্যতম কারণ এবছর ফসলি জমি থেকে পানি সরছে না। তাছাড়া অসময়েও বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষক।
চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ঘোষের হাট, কেতুয়া, মহামায়া, পল্লী বিদ্যুৎ ও জাফর বাড়ি হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা, কামরাঙ্গা, মনিহার, ও কচুয়া উপজেলার ডুমুরিয়া, বাসাবাড়িয়া, সাদিপুরা, নলুয়া এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উচু জমির পানিও সরেনি। উল্টো জমিতে জন্ম নিয়েছে প্রচুর আগাছা। যা পরিস্কার করছেন কৃষকরা।
কৃষক আয়াত আলী, রফিক মিয়া জানান, গত বছর এই সময়ে জমিতে সবজি ছিলো। এখন আছে ঘাস। জমি থেকে কবে পানি সরবে, কবে বীজ বপনের উপযোগী করতে তুলবো তা’ বুঝতে পারছি না।
অপরদিকে এর প্রভাব পড়েছে চাঁদপুরের কাঁচা বাজারগুলোতে। প্রতিটি সবজির দাম গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। উঁচু জমিগুলোতে সবজি চাষ না হওয়ায় কাঁচা শাকসবজির দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। দামের বিষয়টি নিয়ে এমনই প্রতিক্রিয়া জানালেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
বৃষ্টি মৌসুম শেষ হলেও এবছর অসময়েও বৃষ্টি হচ্ছে। তাই চাঁদপুরের প্রায় ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ অসম্ভব হয়েছে পড়েছে। তবে আগাম না হলেও যথাসময়ে শীতকালীন সবজির বীজবপন সম্ভব হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আলী আহাম্মদ।
তিনি জানান, এবছর ধাপে ধাপে বৃষ্টি হওয়াতে পানি সরতে একটু সময় লাগছে। তবে আর বৃষ্টিপাত না হলে আগাম না হোক অন্তত শীতকালীন সবজি চাষ সম্ভব হবে।
চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত শীত মৌসুমে চাঁদপুরের বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি উৎপাদন হয়েছে ৯০ হাজার ৫শ’ ৮৭ মেট্রিক টন। হেক্টর প্রতি ফলন হয়েছিলো ১৭.৪০ মেট্রিক টন। সবচে বেশি উৎপাদন হয়েছে টমেটো। যা ছিলো ১৫ হাজার ৭শ’ ৮ মেট্রিক টন।