চাঁদপুর জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা

রাস্তা থেকে বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার সরানোর নির্দেশ



শাহ আলম খান
চাঁদপুর জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা গতকাল রোববার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জামাল হোসেনের পরিচালনায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ওয়ারলেস মোড় থেকে শুরু করে রাস্তার দুই পাশে বাসা বাড়ি, দোকান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুন্দর করে সাজানো হবে। রাস্তার দুইপাশে পরিস্কার করা হবে। আমরা মাইকিং করে এবং চিঠির মাধ্যমে জানানো হবে মজিববর্ষ উপলক্ষে রাস্তার পাশে থাকা বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে রঙ করার জন্য। রাস্তার থাকা সব বিলবোর্ড, ব্যাণার, পোস্টার সরানোর নির্দেশ দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, পৌরসভার কাছে অনুরোধ রাস্তার পাশে ময়লা-আবর্জনা নিয়মিত পরিস্কার করার জন্য এবং ডাস্টবিনগুলো চারদিকে উচু করে বাউন্ডারি দেয়ার জন্য। জমি আছে ঘর নাই সে ঘরগুলো সম্পূর্ণভাবে শেষ হলে সবাইকে নিয়ে আলোচনা করে ভালোভাবে অনুষ্ঠান করে বুঝিয়ে দেয়া হবে।
নৌ-পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মিনি কক্সবাজারের দিকে খেয়াল রাখার জন্য। মানুষ যেভাবে নৌকায় করে যাওয়া-আসা করে তাদের যেন কোন ধরনের সমস্যা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। জিআরপি থানার পাশে এতবড় মাদ্রাসা গড়ে উঠেছে, কিভাবে এই জায়গা তারা নিয়েছে কতটুকু সরকারের কাছে থেকে লিজ নিয়েছে আর কতটুকু জায়গা অবৈধ দখল করে আছে তা আমাদের জানা দরকার।
এসময় জেলা প্রশাসক, আল আমিন মডেল মাদ্রাসার এমপিভুক্ত কিনা, সঠিক কাগজপত্র আছে কিনা, কিভাবে ছাত্র ভর্তি করায় সে দিকে নজর বাড়ানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
কেজি স্কুলের সমস্যা কথা তুলে ধরা হলে জেলা প্রশাসক বলেন, কতগুলো কেজি স্কুল আছে আর কতগুলো অবৈধভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে তা দেখে শিক্ষা অফিসারকে রিপোর্ট দেয়ার জন্যে তাগিদ দেয়া হয়। সফরমালি বাজারের অনিয়মিতভাবে কিছু লোক গত ১০ বছর ধরে অবৈধভাবে টোল আদায় করে যাচ্ছে সে ব্যাপারে তাদের সাথে আলাপ করে এবং তাদের কোন সঠিক কাগজপত্র আছে কিনা সেগুলো দেখে রিপোর্ট দেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়।
ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের চাঁদপুর জেলাতে ডাকাতি খুব কম ঘটে, হঠাৎ করে এবছর জানুয়ারি মাসের ২২ তারিখে মতলব উওরে বড় ধরনের ডাকাতি ঘটে। ডাকাতি হয় মতলব উওরের বাগানবাড়ি ইউনিয়নের কালীর বাজার এবং ষাটনল ইউনিয়নের কারীপুর বাজারে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে মিশন শুরু করে ভোর ৪টার দিকে শেষ করে। ডাকাত সদস্যরা ১৭ জন কেউ চাঁদপুরের না, সবাই বাহির থেকে এসে এই ডাকাতি করে। আমরা ইতোমধ্য ৪ জনকে ধরতে সক্ষম হয়েছি। ওইসময় তারা বাজারের ৪/৫টি সিসি ক্যামেরা পর্যন্ত নিয়ে যায়।
হত্যা মামলা সম্পর্কে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বলেন, শাহরাস্তিতে পারিবারিক কারণে বড় ছেলের হাতে বাবা খুন হয়েছে সেই খুনিকে আমরা ধরতে সক্ষম হয়েছে। হাজীগঞ্জ চাচাতো ভাইয়ের সাথে জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে একজন খুন হয়েছে, তাকেও আমরা ধরতে সক্ষম হয়েছে। দুই একটি বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া জেলায় আইন শৃঙ্খলা অনেক ভারো অবস্থায় রয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতনের ব্যাপারে মানুষ আগে ভয়ে আসতো না কিন্তু এখন বিচারের জন্য তারা আমাদের কাছে আসে। ট্রাফিক ব্যবস্থার জন্য সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। আমরা তা মনিটরিং করে দেখছি।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত ডা. সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, মতলব দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ, নৌ থানার ওসি মো. আবু তাহের, জিআরপি থানার ওসি মো. সাখাওয়াৎ প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপায়ন দাস শুভ, মতলব দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফামিদা হক, জেল সুপার মাইনুউদ্দিন ভূঁইয়া, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রজত শভ্র সরকারসহ সরকারি অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।