
স্টাফ রিপোর্টার :
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করার পেছনে একটি মূলমন্ত্র কাজ করেছে। তা হচ্ছে- সাম্প্রদায়িকতা। এই অপশক্তি বাংলাদেশকে নিয়ে যাঁরা নতুনভাবে চিন্তা করেছে তাঁদের বেছে বেছে হত্যা করেছে। ঘাতকরা বুঝতে পেরেছে বাঙালিদের আর দমিয়ে রাখা যাবে না। এদেশ তারা স্বাধীন করেই ছাড়বে। তাই বিজয়ের আগমুহূর্তে এসে এদেশের বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তারা তাদের হত্যা করেছে। এর পেছনে তাদের উদ্দেশ্য ছিলো, বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও এ দেশটি যাতে অকার্যকর হয়ে থাকে। যাতে বাঙালি নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারে। তাই বিজয়ের আনন্দের দু’দিন আগে ১৪ ডিসেম্বর আমাদের বেদনাবিধুর শোকের দিন। এই কলঙ্কিত দিনটির কারণে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে গিয়েছে।
তিনি বলেন, যাঁরা বাবা-মা, ভাই-বোন তথা স্বজন হারিয়েছেন তাঁরা বুঝেন বাংলাদেশের দাম কত, মুক্তিযুদ্ধের দাম কত, বিজয়ের দাম কত। আমরা যারা এর সুবিধাভোগী তারা হয়ত অনুভব করি। কিন্তু এর মূল্য যে কতটুকু তা শুধু স্বজন হারানোরাই বুঝেন। জেলা প্রশাসক বলেন, চাঁদপুরে স্বাধীনতার পক্ষে যেমন গৌরবগাঁথা ইতিহাস রয়েছে, তেমনি এর বিপরীতমুখী ইতিহাসও রয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আবদুল আলিম, ডা. সোলায়মান খানসহ আরো অনেক বীর সন্তানের বাড়ি চাঁদপুরে। যাঁরা মহান স্বাধীনতার জন্যে আত্মাহুতি দিয়েছেন। আবার বঙ্গবন্ধুর খুনির বাড়িও চাঁদপুরে। তাই আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে- এখানে স্বাধীনতার যে নানা ভাস্কর্য ও স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে, এর পাশাপাশি ঘৃণাস্তম্ভও করা উচিত। যেখানে গিয়ে মানুষ সেই নরপিশাচ ঘাতকদের ঘৃণার সাথে থু থু নিক্ষেপ করবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ ওচমান গনি পাটওয়ারী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, বিএলএফ কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা হানিফ পাটওয়ারী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জীবন কানাই চক্রবর্তী, জেলা বিএনপি নেতা মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ মাস্টার, শিক্ষাবিদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ মাস্টার, জেলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায় ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ইঞ্জিনিয়ার মো. সফিকুর রহমান।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শরীফ চৌধুরীর সভাপ্রধানে ও সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহীনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন শহীদ পরিবারের স্বজন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খান, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকরাম চৌধুরী, কাজী শাহাদাত, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও প্রেসক্লাবের সদস্য অ্যাড. বিনয় ভূষণ মজুমদার, প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার আহমেদ, মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার সাহা, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বিএম হান্নান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, গিয়াস উদ্দিন মিলন, রহিম বাদশা, সোহেল রুশদী, খেলাঘর চাঁদপুরের সভাপতি হাফেজ আহমেদ, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌস ও আলোকিত চাঁদপুরের সম্পাদক ও প্রকাশক জাকির হোসেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন প্রেসক্লাবের লাইব্রেরী সম্পাদক হাসান মাহমুদ। অনুষ্ঠানে চাঁদপুরের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।