প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে
স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুর নৌ-সীমানার মেঘনা-ডাকাতিয়া নদীতে বিগত কয়েক বছর যাবত জাগ ফেলে অবৈধভাবে দেশীয় প্রজাতির মাছের বংশ ধ্বংস করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থাগ্রহণ করা একান্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
চাঁদপুর জেলার ডাকাতিয়া ও মেঘনা নদীর বিভিন্ন অংশে বিপুলসংখ্যক অবৈধ জাগ দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ও মৎস্যজীবীরা প্রকাশ্যে দেশীয় প্রজাতির মাছ শিকার করছে। জাগ নামক এ ফাঁদে ডিমওয়ালা মা মাছ ও দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছের পোনাসহ বিভিন্ন আকারের মাছ প্রতিনিয়ত ধরা হচ্ছে। এসব জাগ উচ্ছেদে জেলা মৎস্য বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসন যৌথ উদ্যোগ নিলে তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। করোনা পরিস্থিতির কারণে সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য বিভাগ।
অন্যদিকে ডাকাতিয়া নদীর হাজীগঞ্জ থেকে চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মোলহেড পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে শত-শত জাগ। এসব অবৈধ একাধিক জাগের মালিক একই ব্যক্তি। প্রভাব খাটিয়ে বছরকে বছর তারা নদী দখল করে আছে।
গত সোমবার সকাল থেকে মেঘনা নদীর মোহনা থেকে বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের লালপুর পর্যন্ত দেখা গেছে শত শত জাগ। জানা গেছে, এসব জাগগুলো শত-শত গাছ কর্তন করে এনে দিয়ে থাকে জেলে ও মৎস্যজীবীরা।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন-১৯৫০-এ বলা হয়েছে, মাছ ধরার জন্য নদী বা জলাশায়ে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে মাঝখানে বেড়া, বাঁধ, টিবি ও অন্য কোনো কাঠামো নির্মাণ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পানিতে বিষ প্রয়োগ, কল-কারখানার বর্জ্য পদার্থ নিক্ষেপ করে মাছের চারণক্ষেত্র দূষিত করে বা অন্য কোনোভাবে মাছ ধ্বংস করা বা সেই উদ্দেশে উদ্যোগ নেয়া যাবে না। আইন অমান্যকারীদের সর্বোচ্চ দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড (তবে এক বছরের নিচে নয়), অথবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী বলেন, করোনা পরস্থিতির শুরুতে এসব জাগ উচ্ছেদ করার জন্য মালিকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। চাঁদপুর মডেল থানায় এ বিষয়ে একটি বৈঠকও হয়। সেখানে তাদের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু করোনার কারণে পরবর্তীতে আর উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়নি। তবে অবস্থার আলোকে আবারও এসব জাগের মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
২১ জানুয়ারি, ২০২১।