চাঁদপুর রেল স্টেশনে যাত্রীদের দুর্ভোগ

বিশ্রামাগার ও কেন্টিন না থাকায়

এস এম সোহেল
‘আনন্দ ভ্রমণ আর নিরাপদ জীবন’ বাংলাদেশ রেলওয়ে যোগাযোগ। কিন্তু দূর-দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীদের জন্য বিশ্রামাগার ও কেন্টিন না থাকায় যেমনি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তেমনি লোকবলের অভাবে ভেঙে পড়ছে চাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশনের কার্যক্রম। চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রেলপথের চাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশন নানা সমস্যায় জর্জরিত। এতে করে প্রতিনিয়ত যাত্রীরা পোহাচ্ছে চরম দুর্ভোগ। জনবল সংকটে যাত্রী সেবার মান দিন-দিন ভেঙে পড়ছে।
সরেজমিনে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক বছর আগে চাঁদপুর-লাকসাম সবকটি স্টেশন আধুনিকায়ন হয়েছে। যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে চাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশনটি বিভিন্ন সমস্যায় জর্জড়িত হয়ে যাত্রী সাধারণের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রীদের বসার স্থান হিসেবে কিছু লোহার বেঞ্চ দিলেও তা পর্যাপ্ত নয়। ফলে যাত্রীরা বসার জায়গা না পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আগত রোগীসহ অন্যান্য যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ও প্লাটফর্মের মেঝেতে বসে থাকতে দেখা যায়। চাঁদপুর থেকে প্রতিদিন এ স্টেশনের উপর দিয়ে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস ও সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেন এবং কুমিল্লা ও লাকসামগামী কমিউটার ডেম্যু ট্রেন চলাচল করে থাকে। যদিও করোনাকালে ডেম্যু ট্রেনসহ অন্যান্য ট্রেন বন্ধ রয়েছে। দৈনিক হাজার হাজার যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানান ভুক্তভোগী যাত্রী সাধারণ।
তাছাড়া চাঁদপুর বড়স্টেশন হচ্ছে পর্যটন এলাকা এখানে অনেক ভ্রমণ পিপাসুরা আসে ভ্রমণে। তারা ভাড়াভিত্তিক রেস্ট হাউজ চায়। কিন্তু এখানে কোন রেস্ট হাউজ নেই। চাঁদপুরে যদি চট্টগ্রামের মতো রেস্ট হাউজ এবং মানসম্মত রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে যেমন যাত্রীদের সুবিধা হবে অন্যদিকে সরকারি রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে।
বরিশাল থেকে আসা যাত্রী তমিজউদ্দন বলেন, লঞ্চে করে মেয়ে ও নাতি নিয়া চাঁদপুর আইছি চিটাগাংয়ে যামু। ট্রেন ছড়বো ভোর ৫টায়। ট্রেন ছড়ার আগ পর্যন্ত বিশ্রামের ব্যবস্থা থাকলে অনেকটা সুবিধা হতো। কিন্তু বিশ্রামের জায়গা না থাকায় স্টেশনে ফ্লাটফর্মে বসে সময় কাটাচ্ছি।
চাঁদপুর রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার মো. সোয়াইবুল সিকদার জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ের ১৭টি ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে ট্রাফিক, যার দায়িত্বে রয়েছি আমি। আমার এ বিভাগে ৭৬ জন জনবল থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ১৭জন। এ সীমিত জনবল দিয়ে রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগ পরিচালনা করতে হিমশিম খেতে হয়। তারপরও সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
যাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নতুন ভবন করে দিয়েছে। সেখানে যাত্রীদের জন্য ২টি বিশ্রামগার রয়েছে। যা পর্যাপ্ত নয়। চাঁদপুর-লাকসাম-কুমিল্লা-চট্টগ্রাম রুটে ৪টি ট্রেন প্রতিদিন চলাচল করতো। বর্তমান করোনার কারণে চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে মেঘনা এক্সপ্রেস চলাচল করে। যা চাঁদপুর থেকে ছাড়ার সময় ভোর ৫টায়।
তিনি বলেন, চাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশন প্রথম সাড়ির একটি স্টেশন। এখান দিয়ে বরিশাল তথা সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল, চাঁদপুর, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, শরীয়তপুর ও মাদারীপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন যাতায়াত করে। স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন চাঁদপুর স্টেশন দিয়ে কয়েক হাজার লোকজন আসা-যাওয়া করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় স্বল্প লোকবল দিয়ে আমাদের সেবা দিলেও স্টেশনে নেই কোন খাবার হোটেল এবং যাত্রীদের বিশ্রামের পর্যাপ্ত স্থান। দু’টি বিশ্রামাগার থাকলেও তাতে যাত্রী সংকুলান হচ্ছে না।
১০ আগস্ট, ২০২০।