ফরিদগঞ্জে ধর্ষণের অভিযোগে নারী লোভী হাবিব অবশেষে শ্রীঘরে

নারায়ন রবিদাস
পেশায় অটোবাইক চালক হলেও নেশা তার নারীদের মুঠোফোনের মাধ্যমে কৌশলে তার প্রতি আকৃষ্ট করা। এক পর্যায়ে তার সাথে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে নিজের নারী লোভের তৃষ্ণা মেটানো। তার এই অবৈধ কুকর্মের কথা তার স্ত্রী নিজেই স্বীকার করে তার জ¦ালায় অতিষ্ট হয়ে বাবার বাড়িতে চলে গেছে। এসব কুকর্ম করে বেড়ানো হাবিব খান বাবু (৩০) অবশেষে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলায় আটক হয়ে এখন শ্রীঘরে। এক গৃহবধূকে কৌশলে অপহণের পর আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হাবিব খান বাবুকে আটক করে গত শুক্রবার দুপুরে চাঁদপুর আদালতে প্রেরণ করেছে ফরিদগঞ্জ পুলিশ।
জানা গেছে, উপজেলার গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের পূর্ব ধানুয়া গ্রামের ওয়ারিশ খায়ের বাড়ির খোরশেদ আলমের ছেলে হাবিব খান বাবু পেশায় অটোবাইক চালক। কিন্তু সে নিজেকে এক সময় একেক পরিচয় দিতো। সে ইতোপূর্বে বেশ কয়েকটি অটোবাইক চুরি করেছে। নারী লোভী হাবিব সুঠাম দেহের অধিকারী। সে কৌশলে নারীদের সাথে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মুঠোফোনে প্রেমের অভিনয় করে তাদের সাথে অবৈধ সর্ম্পক স্থাপন করতো। একই কথা ধানুয়া এলাকার লোকজনও জানান। এছাড়া পরকীয়ায় জড়িয়ে সে বহু নারীর সংসার ভেঙেছে।
তার দ্বিতীয় স্ত্রী শামছুন্নাহার বেগম জানান, তার স্বামী একাধিক বিয়ে করেছে। সে দ্বিতীয়। তার অত্যাচারের কারণে গত ৫ মাস আগে সে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছে। ইতোপূর্বে তার স্বামীকে এই পথ থেকে সরানোর জন্য বহু চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোন কিছুই কাজে আসেনি। তিনি নিজে ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া, রূপসা, প্রত্যাশী ও শরীয়তপুর জেলা থেকে অবৈধ কর্মে লিপ্ত অবস্থায় আটকের পর অর্থ দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছেন।
হাবিব খান বাবু সর্বশেষ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক গৃহবধূকে টার্গেট করে। সে মুঠোফোনে ওই গৃহবধূকে নানাভাবে উত্যক্ত করে। ওই গৃহবধূ তার বাবার বাড়ি গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের শোভান গ্রামে আসলে হাবিব খান তার এক সহযোগীকে নিয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর কৌশলে অপহরণ করে। পরে ঐ গৃহবধূকে পাশর্^বর্তী হাইমচর উপজেলার আলগী এলাকায় একটি ঘরে আটকে রাখে। অভিযুক্ত হাবিব নিজে পুলিশে চাকরি করে বলে হুমকি দিয়ে ঐ গৃহবধূর পিতা-মাতাসহ পরিবারের লোকজনকে মামলায় জড়িয়ে শেষ করে দিবে এমন ভয়-ভীতি দেখিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। ৯ দিন পর ঐ গৃহবধূ কৌশলে বৃহস্পতিবার সকালে পালিয়ে তার পিত্রালয়ে চলে আসে। বিষয়টি তার পরিবারের লোকজনকে জানানোর পরে তার পিতা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরিদগঞ্জ থানায় নারীও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। এরপর পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত হাবিব খানকে পার্শ^বর্তী হাইমচর উপজেলার আলগী এলাকা থেকে আটক করে এবং শুক্রবার দুপুরে তাকে চাঁদপুর আদালতে প্রেরণ করে। এছাড়া ঐ গৃহবধূকে উদ্ধার করে তার মেডিকেল টেস্ট ও ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের জন্যও চাঁদপুর প্রেরণ করে।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদ হোসেন জানান, ঐ গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে নারীও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করলে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত হাবিব খানকে আটক করা হয়। শুক্রবার দুপুরে গৃহবধূর মেডিকেল টেস্ট ও ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের জন্য চাঁদপুর প্রেরণ করা হয়। এছাড়া হাবিবকে চাঁদপুর আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১।