ফরিদগঞ্জে প্রবাসীর ২০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও ইমাম মাঝি

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো
প্রথমে বন্ধুত্বের সম্পর্ক করে পরে প্রতারণার মাধ্যমে বিশ্বাস ভঙ্গ করে অভিনব কায়দায় দুবাই প্রবাসী মো. শরিফ হোসেনের কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে আছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার রামপুর এলাকার ইমাম হোসেন মাঝি নামে এক প্রতারক। এ নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় ইমাম হোসেনর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর থানায় একবার বৈঠক হলেও দ্বিতীয় বৈঠকে উপস্থিত না হয়ে গোপনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত ইমাম হোসেন মাঝি।
থানায় অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরমতুরা গ্রামের শরিফ হোসেন ও একই উপজেলার রামপুর এলাকার মোস্তফা মাঝির ছেলে ইমাম হোসেন দুবাইয়ে প্রবাস জীবন-যাপন করতেন। দুবাইতে শরিফ হোসেন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন। এ সুবাদে চতুর ইমাম হোসেন তার স্বার্থে হাসিলের জন্য শরিফের সাথে প্রথমে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে ব্যবসার কথা বলে ইমাম হোসেন সুকৌশলে শরিফ হোসেনের কাছ থেকে হাওলাতের কথা বলে বিভিন্ন সময়ে নগদে ও ব্যংকের বিভিন্ন হিসাব নম্বরের মাধামে ইমাম হোসেনর স্ত্রী মরিয়মের পরামর্শে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে গোপনে দুবাই থেকে বাংলাদেশে চলে আসে। দুবাইতে ইমাম হোসেনকে খুঁজে না পেয়ে শরিফ হোসেনের টাকা উদ্ধার করতে তার স্ত্রী আলিসা আক্তার নিজে বাদী হয়ে ইমাম হোসেনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ফরিদগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানার ওসি মো. আবদুল মান্নানের নির্দেশে এএসআই মো. আমজাদ হোসেন অভিযোগের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এসময় অভিযুক্ত ইমাম হোসেন তার নিজ গ্রামে অবস্থান করলেও থানায় অভিযোগের বিষয়টি টের পেয়ে পালিয়ে বেড়ায়। অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পঞ্চায়েতের কৌশলে ঘটনাটি মিমাংসার লক্ষ্যে অভিযুক্ত ইমাম হোসেনকে একটি বৈঠকে উপস্থিত করা গেলে তিনি প্রতারণার কথা স্বীকার করেন। দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক হলেও ঈদের পর ১০ জুলাই বিকেলে আবার থানায় বৈঠক বসার কথা থাকলেও শরীফ হোসেন এবারো কাউকে না জানিয়ে থানার ওসিসহ সবাইকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গোপনে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। শুধু তাই নয়, থানায় বৈঠক বসার আগেও ওই ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন ভূঁইয়া ও স্থানীয় রাজনীতিবিদ মো. নেছার আহাম্মেদ ভূঁইয়ার উপস্থিতিতে এলাকায় সালিসী বৈঠক হলেও তা মীমাংসা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল মান্নান বলেন, শরীফ হোসেনের কাছ থেকে প্রতারণা ও বিশ^াস ভঙ্গ করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগটির প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে। ভুক্তভোগীদের আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে একাধিক বৈঠকে কোন সুরাহা না করতে পেরে শরিফ হোসেনের স্ত্রী আলিসা আক্তার তার স্বামী শরীফ হোসেনের কষ্টার্জিত প্রায় ২০ লাখ টাকা উদ্ধার করতে ইমাম হোসেন ও তার স্ত্রী মরিয়মকে আসামি করে প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগে একটি মামলা আদালতে দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

২৬ জুলাই, ২০২৩।