মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এর জীবনী

ইল্শেপাড় রিপোর্ট
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এমপি ১৯৪৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুরের সম্ভ্রান্ত চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মরহুম আলী আহম্মদ মিয়া ও মা মরহুমা মোসা. আক্তারুন্নেছা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইসলামের ইতিহাসে এমএ পাস করে পরে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। সঙ্গীত পিপাসু মায়া চৌধুরী মিউজিক কলেজ থেকে আই মিউজিক পাস করেন।
১৯৬৫ সালে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন এবং তৎকালীন পাকিস্তান আমলে বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের জুন মাস। একদল গেরিলা যোদ্ধা রাজধানী ঢাকা শহরে ভয়াবহ আক্রমণের পরিকল্পনা করছে। এরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুুদ্ধকালীন ২নং সেক্টরের ক্র্যাক প্লাটুন সদস্য। তাদের টার্গেট হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থানরত বিদেশি পর্যটক, রাষ্ট্র্রদূত ও গণমাধ্যমকর্মীসহ বিশ্বের কাছে বাংলাদেশে চলমান ভয়াবহ মুুক্তিযুদ্ধের বার্তা পৌঁছানো।
দিনের আলো পেরিয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই ক্র্যাক প্লাটুন সদস্যদের বোমার ভয়াবহ শব্দে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালসহ আশেপাশের এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠলো। বিশ্বের মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছালো বাংলাদেশে মরণপণ মুক্তিযুদ্ধ চলছে। এ অপারেশনে নেতৃত্বে ছিলেন বর্তমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এমপি।
১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গ

বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যুদ্ধকালীন সময়ে ২নং সেক্টরের ক্র্যাক প্লাটুনের কমান্ডার হিসেবে বীরত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন ও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ‘বীরবিক্রম’ খেতাব লাভ করেন।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ১৯৭২ সালে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের একজন একনিষ্ঠ নির্ভীক কর্মী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন এবং চতুর্থবারের মতো ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য হিসেবে সফল ভাবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৯ সালে ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন করতে গিয়ে জাতীয় চার নেতার সাথে দীর্ঘ তিন বছর কারারুদ্ধ থাকার পর হাইকোর্টে রিটের মাধ্যমে মুুক্তি লাভ করেন।
মতলব উত্তর উপজেলার সম্ভ্রান্ত চৌধুরী পরিবারের সদস্যগণ ও আত্মীয়-স্বজনরাই এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এমপি’র বাবা মরহুম আলী আহম্মদ মিয়া জনপ্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘ ৩০ বছর সুনামের সাথে মতলব উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এমপি ১৯৯৬ সালে ২৬১ চাঁদপুর-২ আসন মতলব থেকে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে একই আসন (মতলব উত্তর-দক্ষিণ) থেকে দ্বিতীয়বারের মত সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে ১৯৯৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত এবং ১৯৯৮-২০০১ সাল পর্যন্ত নৌ-পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মায়া চৌধুরী।
একজন জনহিতকর মানুুষ হিসেবে এলাকার একাধিক স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। মতলব উত্তর উপজেলা, মতলব পৌরসভা ও ছেংগারচর পৌরসভার উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠাতা। একান্ত প্রচেষ্টায় মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় অনেক রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট নির্মাণ করে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
রাজনীতির পাসাপাশি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এমপি ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে যুক্ত। ব্যক্তি জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।