শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন

এস এম সোহেল
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয় সম্মুখে চাঁদপুর জেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রথমেই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপির পক্ষে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ও পৌর মেয়র মো. জিল্লুর রহমান। এরপর পর্যায়ক্রমে জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসকসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ, জেলা পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা এম এ ওয়াদুদ, পৌর মেয়র মো. জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে চাঁদপুর পৌরসভা, নৌ-পুলিশ, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ, চাঁদপুর প্রেসক্লাব, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, জেলা মৎস্য দপ্তর, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চাঁদপুর জেলা কারাগার, চাঁদপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২, চাঁদপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর ও বিটিসিএল চাঁদপুর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
রাতে চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা মঞ্চে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, নীল নকশা করে গভীর চক্রান্তের মাধ্যমে পাক-হানাদার বাহিনী জাতীয় নেতাদের হত্যা করে। কিভাবে আমাদের দেশকে পঙ্গু করা যায়, তা তারা বাস্তবায়ন করেছে। আমরা নতুন প্রজন্মকে জানাতে চাই, অতীতে আমাদের সাথে কি রকম নিঃশংস করেছে। মেধাশূন্য জাতি তৈরি করতে তারা এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, অতীতকে ভুললে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যাবে না। আমাদের অতীতের স্মৃতি মনে রাখতে হবে। আল-বদর, আল-সামস ছাড়া প্রত্যেকেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মুক্তিযুদ্ধ করেছে। আমাদের উচিত মুক্তিযুদ্ধের তালিকা না করে রাজাকারের তালিকা করা। অতীতের ঘটনা আমাদের এখনো ক্ষত-বিক্ষত করে। সব বাঁধা পেরিয়ে আমাদের দেশ এখন পাকিস্তান-ভারতের চেয়ে অনেক এগিয়ে গেছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইমতিয়াজ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং দৈনিক সুদীপ্ত চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এমআর ইসলাম বাবুর পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, বিজয় মেলার স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদ, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, সাহিত্য একাডেমির মহাপরিচালক কাজী শাহাদাত, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, কবি ও ছড়াকার ডা. পীযূষ কান্তি বড়ুয়া।
আলোচনা সভার শুরুতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের উপর ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করেন পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন মুক্তিযোদ্ধা সানাউল্লাহ ও গীতা পাঠ করেন জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল পরাক্রমের সামনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে হানাদার পাকিস্তানি ঘাতক বাহিনী এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে মেতেছিল। বাঙালিকে মেধা মননশূন্য করতে তারা বেছে বেছে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, দার্শণিক, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, প্রকৌশলী, আইজনীবী ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অগ্রগণ্য সহস্রাধিক বরণ্যজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে এই দিন।

১৫ ডিসেম্বর, ২০২১।