সজীব খান
চাঁদপুরে সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে যুবদল নেতা মো. ইউসুফ পাটওয়ারী (৪০) নামে এক মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা করেছে আপন খালাতো ভাই ও তার পরিবারের সদস্যরা। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের মিয়ার বাজার সংলগ্ন পশ্চিম কুমারডুগী এলাকার পাটওয়ারী বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
মো. ইউসুফ পাটওয়ারী ওই এলাকার মৃত কলিম উল্লাহ পাটওয়ারী ছোট ছেলে। এ ঘটনায় নিহত ইউসুফ পাটওয়ারীর বড় ভাই মাও. ইব্রাহীম পাটওয়ারী (৬০) কেও ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় জড়িত রিক্সা-ভ্যান চালক মাইনুদ্দিন প্রধানিয়া (৬২), তার স্ত্রী হাজেরা (৪৭) ও ছেলে রমজান (৩৫) কে স্থানীয় এলাকাবাসী আটক করে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। আটক মাইনুদ্দিন প্রধানীয়া ইউছুফ পাটওয়ারীর আপন খালাতো ভাই।
ইউসুফ পাটওয়ারীর ছোট বোন আমেনা আক্তার জানান, দীর্ঘদিন ধরে সম্পত্তিগত বিরোধ নিয়ে ইউসুফ পাটওয়ারীকে মাইনুদ্দিন প্রধানিয়া (৬০), তার ছেলে রমজান (৩৫), রবিউল (২৫) ও রহিম (২০) বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে।
সকালে তার বড় ভাই মাও. ইব্রাহিম পাটওয়ারী ও ইউসুফ পাটওয়ারী পুকুরের ঘাটলায় সামিয়ানা টানানোকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হলে এক পর্যায়ে মাইনুদ্দিনসহ তারা ছেলেরা ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। সেখানেই ইউছুফ পাটওয়ারীর মৃত্যু হয়। এতে গুরুতর আহত হয় আমার বড় ভাই মাও. ইব্রাহীম। আমরা এই খুনের বিচার চাই।
চাঁদপুর শহরের হকার্স মার্কেটের শপথ চত্বর মোড়ে মেহেদী মোবাইল হাউজ নামে ইউসুফ পাটওয়ারীর একটি শো-রুম রয়েছে। তার স্ত্রী ও ২ ছেলে। এ ঘটনার তার গ্রামের বাড়ি ও মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। এছাড়া ইউসুফ পাটওয়ারী শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড যুবদলের সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুকুর চাকমা। তিনি মৃত ইউছুফ পাটওয়ারীর মা হনুপা বেগমকে সান্তনা প্রদান করেন এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধারে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েছেন।
চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বাহার মিয়া জানান, ঘটনার পর ইউসুফ পাটওয়ারীর বাড়ি পুলিশ পাঠানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে জড়িত ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। মরদেহ চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে থেকে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে হত্যাকাণ্ডের রহস্য জানা যাবে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫।
