সাহেদ হোসেন দিপু
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় হাইমচরে মিজান খান বাবুর্চির বখাটে ছেলে মহন খান ভিংগুলিয়া গ্রামের গনি গাজীর ছেলে মোবারক গাজী (২০) কে গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার সময় মহন তার ভাই রাজন খান, সঙ্গী আলউদ্দিন জমাদার ও ছলেমান জমদ্দারের সঙ্গবদ্ধ হামলা ও ছুরিকাঘাতে নিহত মোবারকের বন্ধু মহিন ভূঁইয়া ও মহিন খান রক্তাক্ত জখম হয়েছে। আহতদের মধ্যে মহিন ভূঁইয়ার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়েছে। অপরদিকে মহিন খান চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকৎসাধীন আছে। ঐ ঘটনায় নিহত মোবারক গাজীর পিতা গনি গাজী বাদী হয়ে শনিবার (২০ মার্চ) হাইমচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং ১০, তারিখ ২০/৩/২০২১ইং।
বখাটেদের হাতে নিহত মোবারক গাজী হত্যা মামলায় সলেমান জামাদার নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। হত্যার মূল হোতা রাজন খাঁন ও মহন খাঁন পলাতক রয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল ৫টায় নিহত মোবারকের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
বখাটে কর্তৃক গলা কেটে হত্যার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও হত্যাকারীরা গ্রেফতার না হওয়ায় নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয়। হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে এলকাবাসীর উদ্যোগে নেয়া মানববন্ধন কর্মসূচি পুলিশের নির্দেশনায় (আইন-শৃংখলা অবনতি হওয়ার আশংকায়) স্থগিত করেছে আয়োজকরা। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
গুরুতর আহত মহিন ভূঁইয়ার বাবা উপজলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শাহজান ভূঁইয়া জানান, তার ছেলে মহিন ভূঁইয়া, তার বন্ধু মহিন খান ও মোবারক গাজী সন্ধ্যায় বাংলাবাজারে আসার পথে হাফেজিয়া মাদরাসা এলাকায় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা মিজান খানের ছেলে রাজন খান (২৩), মহন খান (২১) ও কালু জমাদারের ছেলে আলাউদ্দিন জমাদার (২৪) ও ছলেমান জমাদার (১৯) মহিন ভূঁইয়ার উপর হামলা চালায়। এসময় মোবারক গাজী এগিয়ে আসলে মহন খান ছুরি দিয়ে মোবারক গাজীর গলা কেটে দেয়। তাকে উদ্ধার এগিয়ে আসলে মহিন ভূঁইয়া ও মহিন খানকেও ছুরিকাঘাত করে হামলাকারীরা।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মিন্টু মিয়া কবিরাজ জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ভিঙ্গুলিয়া দুলাল কবিরাজের দোকানে মিজান খান বাবুর্চির বখাটে ছেলে রাজন খান প্রকাশ্যে সিগারেট পান করছিল। এসময় শাহজান ভূঁইয়ার ছেলে মহিন ভূঁইয়া মুরব্বীদের সামনে রাজন খানকে সিগারেট পান না করার জন্য বললে উভয়ে তর্ক-বিতর্কে জড়ালে স্থানীয়রা উভয়কে সরিয়ে দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজন খান ও মহনসহ তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা মহিন ভূঁইয়ার উপর হামলা চালায়। হামলায় মোবারক নিহত হন। মহিন ভূঁইয়া ও মহিন খান সদর হাসপাতালে ও ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন।
স্থানীয় অহিদ গাজী জানান, নিহত মোবারক একটা নিরীহ পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তার মৃত্যুতে পরিবার অসহায় হয়ে পরলো। নিহত মোবারকের বাবা গনী গাজী গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় উপার্জনের আর কেউ রইলো না। এলাকাবাসী হামলাকারী মহন, রাজন, আলাউদ্দিন ও ছলেমানদের দ্রুত গ্রেফতার দাবি জানিয়েছে।
হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবর রহমান মোল্লা জানান, নিহতের বাবা গনি গাজী বাদী হয়ে হাইমচর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। এজাহারটি মামলায় রুপান্তরিত করা হয়েছে। এছাড়া হত্যার সাথে জড়িত সলেমান জমাদার নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
২১ মার্চ, ২০২১।