হাজীগঞ্জে সেলিম হত্যা মামলার প্রধান আসামির দোকান ও ঘরে আগুন

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে মো. সেলিম হোসেন কবিরাজ (৪৫) হত্যা মামলার প্রধান আসামি একই এলাকার আলী আকবর কাজীর (৬০) ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে নিহত সেলিমের শোকে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে আকবর কাজীর মুদি দোকান ও বসতঘর জ্বালিয়ে দেয় বলে জানান এলাকাবাসী। এতে মুদি দোকান ও বসতঘরটি আগুনে পুড়ে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়।
খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস বিভাগের লোকজন গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে আগুনে কোন কিছুই রক্ষা পায়নি। এতে দোকানঘর ও দোকানে থাকা মালামাল এবং বসতঘর, রান্নাঘর ও বসতঘরে থাকা আসবাবপত্র, তৈজষপত্র, খাদ্য সামগ্রী, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এছাড়া বসতঘরে রাখা দোকানের মজুদকৃত মুদি মালামালও পুড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
এদিকে গতকাল শনিবার বিকালে হত্যাকাণ্ডের শিকার মো. সেলিম হোসেনের দাফন সম্পন্ন হয়। তিনি উপজেলার হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের গৌড়েশ^র গ্রামের কবিরাজ বাড়ির মো. আবুল কালাম কালুর ছেলে। এদিন দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে তার মরদেহ হস্তান্তর করে পুলিশ। আগের দিন শুক্রবার জুমার নামাজ পর গৌড়েশ^র গ্রামের পশ্চিম পাড়া মদীনাতুল জামে মসজিদের সামনে এই হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে ইয়াছিন হোসেন সবুজ একই গ্রামের কাজী বাড়ির মৃত আব্দুল ওহাবের ছেলে আলী আকবর কাজী ও আনিসুর রহমান কাজী, আনোয়ার হোসেন কাজীর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন কাজী ও রাশেদ কাজী, আবু সুফিয়ানের ছেলে রাব্বী কাজী, আলী আজ্জমের ছেলে নুরুল ইসলাম কাজী ও আনিসুর রহমানের স্ত্রী রিনা বেগমসহ ৭ জন ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক জানান, নিহতের সেলিম কবিরাজের সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, শুক্রবার রাতে আলী আকবর কাজীর দোকান ও বসতঘরে কে বা কারা আগুন দিয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
অপরদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানের চারা রোপণের সময় কবিরাজ বাড়ির জাহাঙ্গীর কবিরাজের সাথে একই গ্রামের কাজী বাড়ির আজিজ কাজীর সাথে বিবাদের এক পর্যায়ে হাতাহাতির এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন সন্ধ্যায় আজিজের বড় ভাই চাঁন মিয়ার সাথে জাহাঙ্গীরের ভাতিজা ও সেলিমের ছেলে সবুজের সাথে মারামারি হয়। এতে গুরুতর আহত হন চাঁন মিয়া। তিনি রাজধানীর কোন একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে পরেদিন জুমআর নামাজের পর আজিজ ও চাঁন মিয়ার পরিবারের লোকজন জাহাঙ্গীর কবিরাজের পরিবারের লোকজন উপর হামলা করেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত সেলিম কবিরাজ চাঁদপুর সদর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫।