৩ ডজন মামলা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে মিলন

চাঁদপুরের আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশি কড়া নিরাপত্তা

স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুর-১ আসনের (কচুয়া) বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আনম এহছানুল হক মিলন রাজনৈতিক ও প্রতিহিংসামূলক ৩ ডজন মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। গ্রেফতার আতংকে তিনি উচ্চ আদালত ও নি¤œ আদালতে হাজির হতে পারছেন না। কচুয়ায় উপজেলার মামলাগুলো হাজিরা দিতে তিনি চাঁদপুরের আদালতে আসতে পারছেন না। গত ৩ দিন ধরে চাঁদপুরের আদালত প্রাঙ্গণ পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ কড়া নজরদারিতে অবস্থান করছেন।
সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনম এহছানুল হক মিলন ৩০ ডিসেম্বরে ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-১ নির্বাচনী আসন থেকে ঐক্যজোটের প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করার কথা। তিনি নির্বাচনের আগে নি¤œ আদালতে মামলায় হাজির হতে আসার চেষ্টা করলেও পুলিশের হাতে আটক হওয়ার আশংকার কারণে আসি আসি বলেও তিনি আসছেন না।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই চাঁদপুর শহরে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহছানুল হক মিলন আদালতে আসছে এমন গুঞ্জন ছড়ানো হয়। আর এজন্যই চাঁদপুরের আদালত চত্বরে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহছানুল হক মিলনকে আটকের জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে প্রবেশের ২টি গেটেই নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে। চাঁদপুরের আদালতে মিলন আসছে এমন কথা জানতে পেরে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি চাঁদপুরের সকল পর্যায়ের সাংবাদিকরা সকাল ১০টা থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকে। যেন তাদের কাছে প্রতিক্ষার প্রহর দীর্ঘ হয়ে উঠতে লাগল। দুপুর ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষার পর মিলন চাঁদপুরে আসছেন না এমনটা জানতে পেরে সাংবাদিকরা সেখান থেকে সরে আসে।
সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহছানুল হক মিলনের সহধর্মিণী কেন্দ্রীয় মহিলা দলের নেত্রী নাজমুন নাহার বেবী মুঠো ফোনে জানান, মিলন কখন ঢাকা থেকে চাঁদপুর যাবে তা আমি নিজেও জানি না। পুলিশ যেভাবে মিলনকে ধরার জন্য ওৎ পেতে আছে তাতে করে মিলন এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তার গ্রামের বাড়ি কচুয়ায় ও ঢাকার বাসাতে পুলিশ হানা দিয়েছে। চাঁদপুরের আদালত প্রাঙ্গণে পর্যাপ্ত পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে মিলনকে আটকের জন্য। গত রোববার মিলন যেন চাঁদপুরের আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিন পেয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য মিলনের পক্ষে নির্বাচন কমিশনারের কাছে আমি আবেদন করেছি। সেইদিন থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত চাঁদপুরের আদালত প্রাঙ্গণে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, যেন মিলন আদালতে যেতে না পারে। আদালতে প্রবেশ করলেই তাকে হাজিরা দিতে দেয়া হবে না বরং আটক করে আরও বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলায় জড়ানো হবে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলের সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ.ন.ম এহছানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে কচুয়ার প্রায় ৩ ডজন মামলা দায়ের করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে হাত ঘড়ি চুরি, ভ্যানেটি ব্যাগ ছিনতাই, বিদ্যালয়ের মাটি চুরি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, গাড়ি ভাংচুরসহ প্রায় ৩৫টির মতো মামলা রয়েছে। এসব মামলার মধ্য থেকে ১০/১২টি মামলায় এহছানুল হক মিলন জামিনে থাকলেও বাকি মামলাগুলোতে হাজির না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
এহছানুল হক মিলনের পরিবারের পক্ষ থেকে জানা যায়, মিলনকে প্রথমে আটক করার পর পুলিশ তাকে টর্চার করে মারাত্মকভাবে আহত করেছিল। জেলখানায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। জামিনে আসার পর তিনি বাংলাদেশের বাইরে গিয়ে বেশ কিছুদিন অবস্থান করে চিকিৎসাধীন ছিলেন। যার ফলে ওইসব মামলায় তিনি চাঁদপুরের আদালতে হাজির হতে পারেননি। সেজন্যই বাকি মামলাগুলোতে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।