ফরিদগঞ্জে লক্কর-ঝক্কর কাঠের পুল

পথচারীদের দুর্ভোগ

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো
ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের পূর্ব ভাওয়াল গ্রামসহ ৫ গ্রামের শত-শত লোকের চলাচলের একমাত্র কাঠের পুলটি ভেঙে লক্কর-ঝক্কর হয়ে পড়েছে। এতে জনমানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়েছে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজটি। মেরামত না করায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আবেদন করেও ব্রিজ কিংবা কালভার্ট কোনটির বরাদ্দ মিলেনি। যার ফলে চরম ভোগান্তিতে শিকার হচ্ছেন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীসহ পূর্ব ভাওয়াল, পশ্চিম ভাওয়াল ও কাঁশারা গ্রামসহ আশপাশের বাসিন্দারা। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্রিজ নির্মাণ করার দাবি স্থানীয়দের।
সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, এই কাঠেরপুলের খুবই দুরাবস্থা। পায়ে হেঁটে চলাই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ গত কয়েকমাস আগে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা তৈরী হয়। ওই সময় ওই কাঠের পুলের দুই পাশ ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে রিক্সা, ভ্যানগাড়ি ও মোটরসাইকেল পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন বলে জানান স্থানীয়রা।
পূর্ব ভাওয়াল গ্রামের তালুকদার বাড়ির সৈয়দ আহমদ তালুকদার বলেন, গত ৫ বছর আগেও এটি বাঁশের সাকো ছিলো। এরপর স্থানীয়দের উদ্যোগে কাঠের পুল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু গত কয়েকমাস আগে অতিবৃষ্টিতে এটির দু’পাশ ভেঙে পড়ে। এখন চলাচল করতে খুবই কষ্ট হয়।
একই গ্রামের বাসিন্দা দুলাল বলেন, বাঁশের সাকো থেকে আমরাই কাঠের পুল তৈরী করছি। কিন্তু চলাচল করতে অনেক কষ্ট হয়। কয়েকবার যানবাহন পানিতে পড়েছে। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। এখানে মসজিদ ও ঈদগাঁ আছে। ৫ গ্রামের মানুষ এখান দিয়ে যাতায়াত করে। জনপ্রতিনিধিদের বহুবার জানিয়েও কোন কাজ হয়নি। এখানে একটি ব্রিজ কিংবা কালভার্ট নির্মাণ করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রায়হানুল কবির শামীম বলেন, প্রায় ২ বছর আগে এই কাঠের পুলটি ছোট ব্রিজ করে দেয়ার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছি। এ বছরের শুরুতে একবার পিআইওসহ অন্যান্য লোকজন সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন বরাদ্দ আসেনি। খোঁজ-খবর নিলে ওই কর্মকর্তা জানান, আগামিতে বরাদ্দ আসলে করা হবে।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু তাহের অসুস্থ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
প্যানেল চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম পাটওয়ারী বলেন, ব্রিজটি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এটি করার সুযোগ নেই। ত্রাণ ও পূনর্বাসন মন্ত্রণালয় থেকে ব্রিজ করা সম্ভব। তাই আমি প্রকল্প বাস্তায়ন কর্মকর্তার দৃষ্টি কামনা করছি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিল্টন দস্তিদার বলেন, স্থানীয়দের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ব্রিজ নির্মাণের স্বার্থে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরী করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে এলাকাবাসীর দাবি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

২৫ নভেম্বর, ২০২৪।