ইল্শেপাড় রিপোর্ট
চাঁদপুর পৌরসভায় সময়ের সাথে যে পরিমাণ অগ্রগতি ও উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল তার অর্ধেকও বাস্তবায়ন হয়নি বলে দাবি পৌরবাসীর। তাদের দাবি শতবর্ষী এই পৌরসভাটিতে ইতোপূর্বে যারাই নির্বাচিত চেয়ারম্যান কিংবা মেয়র হয়েছেন, তারা তাদের কথা ঠিকমতো রাখতে পারেননি। যার কারণেই সময়ের উন্নয়ন সময়ে কিংবা সঠিক সময়ে হয়ে উঠেনি। ফলশ্রুতিতে অবকাঠামোগতভাবে অনেকটাই পিছিয়ে পরে পৌরসভাটি।
তবে যারাই জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তারা প্রত্যেকেই কম-বেশি নিজদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু পৌরবাসীর উন্নয়নে তাদের ভূমিকা ছিলো অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ। যার কারণে নতুন নেতৃত্বের অপেক্ষায় ছিলো পুরো পৌরবাসী। তাদের সে আশা এবারের নির্বাচনে হয়েছে বলে তারা অনেকটাই আশাবাদী।
এদিকে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনের মধ্য দিয়েই পৌরবাসী আশা করছেন, যারা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন তারা একটি আধুনিক পৌরসভা হিসেবেই গড়ে তুলবেন চাঁদপুরকে। বিশেষ করে শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি পর্যটননির্ভর নান্দনিক পৌরসভা গড়তে কাজ করবেন নির্বাচিত এই পরিষদ। তবে যানজট নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে অতি দ্রুতগতিতেই।
তবে পৌরবাসী দাবি করছেন, প্রায় দেড় যুগ আগে প্রাক্তন পৌর চেয়ারম্যান মরহুম শফিকুর রহমান ভূঁইয়া চাঁদপুর শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে নির্মাণ করেছিলেন আন্ডারপাস ড্রেনেজ লাইন। যা ছিলো একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ফসল। কিন্তু এই চেয়ারম্যানের বিদায়ের পর যারাই দায়িত্বে ছিলেন তারা এই আন্ডারপাস ড্রেনটিকে সচল রাখতে কার্যকর উদ্যোগ নেননি। যার পরিণতি হিসেবে প্রতি বর্ষা মৌসুমে শহরটি হয়ে পড়ে জলাবদ্ধতায়।
জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌরসভাটি যেমন দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। তেমনি পৌরবাসী এই আন্ডারপাসটি অকার্যকর করতে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ আছে। গত দেড় দশকে শহরে সর্বত্র প্রতিনিয়ত বহুতল ভবন নির্মাণ অব্যাহত থাকছে সমানতালে। কিন্তু ভবন মালিকরা তাদের নির্মাণ সামগ্রীর পরিত্যক্ত সিমেন্ট, বালিসহ অন্যান্য বর্জ্য সরাসরি ড্রেনেজ লাইনে ফেলে আসছেন হারহামেশাই। ফলে অল্পসময়ের মধ্যেই বিশাল এই আন্ডারপাস ড্রেনটি পুরোপুরি ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে যায়। যাতে ভোগান্তি বাড়ে পৌরবাসীরই।
এদিকে নান্দনিক শহর হিসেবে চাঁদপুরকে গড়ে তোলার জন্য এই পৌরসভার নেই কোন দীর্ঘমেয়াদী নগর পরিকল্পনাও। নেই আধুনিক ভবন কোড কিংবা সড়ক ব্যবস্থায় নেই যুগপোযোগী কার্যকরী পদক্ষেপ। পাশাপাশি পৌরবাসীর নিত্যদিনের ভোগান্তি যানজট নিরসনেও উদাসীন এই শতবর্ষী চাঁদপুর পৌরসভাটি।
পৌরবাসীর অভিযোগের তীর আছে আবাসিক এলাকার সড়ক ব্যবস্থা নিয়েও। তারা বলছেন, আবাসিক এলাকার সড়কগুলো যেমন নাজুক, তেমনি ড্রেনেজ ব্যবস্থাও। এছাড়া নেই বর্জ্য ফেলার নির্ধারিত ডাস্টবিন। রাতের চলাচল কিংবা নিরাপত্তার জন্য সোডিয়াম লাইটের ব্যবহারেও নেই সংস্কার। যার কারণে রাত মানেই এক অন্ধকারের শহর হয় এই চাঁদপুর পৌর এলাকা।
তবে পৌরবাসী দাবি করছে, পর্যটন শিল্পকে বাস্তবায়ন করতে হলে আধুনিকায়ন করতে হবে চাঁদপুর শহরকেই। এজন্য দরকার একজন দক্ষ ও প্রজ্ঞাময় নেতার। পৌরবাসী নব-নির্বাচিত তরুণ মেয়র অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান জুয়েলের প্রতি এই প্রত্যাশাই করছে।
এছাড়া নির্বাচিত মেয়র যেন হন জনবান্ধব, তিনি যেন বুঝতে পারেন পৌরবাসীর মনে কথা। আর অবকাঠামোগত উন্নয়নে যেন নিতে পারেন যুগপোযোগী সিদ্ধান্ত- এমনটাই প্রত্যাশা নির্বাচিত মেয়রের কাছে পৌরবাসীর।
১২ অক্টোবর, ২০২০।
- Home
- চাঁদপুর
- চাঁদপুর সদর
- অবকাঠামোগত আধুনিক পৌরসভা চায় পৌরবাসী
Post navigation


