স্টাফ রিপোর্টার
শৈতপ্রবাহ আর নিম্নচাপে হঠাৎ বাড়তে থাকা ঘন কুয়াশার কারণে চাঁদপুরের নদীতে নৌযানের চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রাত ১০টার পর থেকে ঘন কুয়াশা নদীগুলোতে জেকে বসে। ফলে লঞ্চসহ অন্যান্য নৌযানগুলোকে নোঙর করে রাখতে হচ্ছে। এছাড়া চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌরুটে ফেরি চলাচল বার-বার বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে ফেরিঘাটের দুই তীরে আটকা পড়েছে শতাধিক যানবাহন।
এতে দুর্ভোগে পড়েছেন পরিবহনের যাত্রীসাধারণ, গাড়িচালক ও হেলপার। ঘন কুয়াশার কারণে সবশেষ মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) ৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর এই নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। এর আগে ১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ১০ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন হরিণা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) ফয়সাল আলম চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবার রাত ২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ ছিলো। দুই পাড়ে প্রায় আড়াইশ করে যানবাহন রয়েছে। এখন ফেরি চলাচল স্বাভাবিক।
এদিকে ঘন কুয়াশার এই পরিস্থিতি আরো দু’একদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা যায়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন সংস্থা সূত্র জানায়, শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌ-রুটে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন চট্টগ্রাম অঞ্চলে যাতায়াত করে। এই নৌ-রুটের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ কিলোমিটার। নৌপথের শরীয়তপুর অংশে ফেরিঘাট ভেদরগঞ্জের নরসিংহপুর আর চাঁদপুর অংশে ফেরিঘাট চাঁদপুর সদরের হরিনায় অবস্থিত। দুই ঘাটে যাতায়াতের জন্য ছয়টি ফেরি চলাচল করছে।
প্রতিদিন এই নৌপথে ৩৫০ থেকে ৪০০ যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হচ্ছে। যানবাহন নিয়ে নৌপথটি পাড়ি দিতে ফেরিগুলোর সময় লাগত দেড় ঘণ্টা। বর্তমানে কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় ২০০ থেকে ২৫০টি যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে পারাপারের অপেক্ষায় নদীর দুই পাড়ের ঘাটে শত শত যানবাহন আটকা থাকে।
চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌ-রুটে চলাচলকারী কস্তুরি নামক ফেরির মাস্টার (চালক) মনিরুজ্জামান বলেন, কুয়াশা থাকলে রাত ৯টার পর ফেরি চালাতে পারি না। ফেরিতে কোনো ফগলাইট না থাকায় কুয়াশায় পথ হারিয়ে চরে আটকে থাকতে হয়। দিনের আলোতে কুয়াশা কাটলে ফেরি স্বাভাবিকভাবে চালাতে পারে। কুয়াশার মধ্যে দুর্ঘটনারও আশঙ্কা থাকে।
নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ইজারাদার ও চরসেনসাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিতু মিয়া ব্যাপারী বলেন, শীতের মৌসুম শুরু হলেই কুয়াশায় ফেরি চালাতে সমস্যা হয়। এর সঙ্গে আছে নাব্যতাসংকট। এ পথে চলাচলকারী যনবাহনগুলোর চালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। প্রায় সময়ই পারাপারের জন্য ঘাটে গাড়ি আটকা পড়ছে।
২০ জানুয়ারি, ২০২১।