চাঁদপুরে নাগরিক ঐক্যের কর্মী সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার
নাগরিক ঐক্য, চাঁদপুর জেলার কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে চাঁদপুর জেলা আইনজীবী পরিষদ মিলনায়তনে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য এস এম আকরাম।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, মানুষ এখন প্রতি মুহূর্তেই ভোগান্তির শিকার। আজ পেট্রোলের দাম বাড়ানো হলো, সাথে সাথে ঢাকা গুলিস্থান থেকে নারায়নগঞ্জ পর্যন্ত ২৫ টাকার বাস ভাড়া ৩৫ টাকা হলো। উদাহরণস্বরূপ বলছি। কিন্তু আমার তো আয় বাড়েনি। এসব বিষয়ে যদি সরকার সচেতন না থাকে, তাহলে তারা তো জনগণের সরকার বলে দাবি করতে পারেন না। যারা রাতের অন্ধকারের ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এবং সরকার গঠন করেছেন, তাদের এ দেশের জনগণের সরকার বলে মানতে রাজি না।
তিনি আরো বলেন, পার্লামেন্টে যদি মন্ত্রী বলে কোভিডের টিকার দাম কত পড়েছে, তা সংসদে বলা যাবে না। তাই সেই সংসদের কি ইজ্জত, কি সম্মান এবং গুরুত্ব। জনগণের প্রতিনিধিত্ব করা তাদের কি অধিকার আছে। গত কয়েকদিন আগে আইনমন্ত্রী বলেছেন নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে আইন প্রণয়ন করার সময় নেই। আপনারা নিজেরাই বলেছেন, গত ১২বছর ক্ষমতায় আছেন, ২০৪০ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন বলে কর্মসূচি দিচ্ছেন। কিন্তু এতবছরেও আপনাদের আইন করার সময় হলো না। আপনারা কত বছর ক্ষমতায় থাকবেন, এটি বাংলাদেশের জনগণ ঠিক করবে। আমি নিজেই আইন তৈরীর কাজে জড়িত ছিলাম। এদেশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইন তৈরীর নজির আছে। সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত রাত ১২টার আগেই আইন তৈরী হয়েছে। আমি নিজেই এসব দেখেছি। আমাদের আপনার আইন সম্পর্কে শিখাবেন!
এসএম আকরাম বলেন, আমি থাকবো না। কিন্তু নাগরিক ঐক্য একদিন ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু আমি চাই এদেশের স্বৈরাচারদের ক্ষমতার অবসান হোক। আর যতদিন বেঁচে থাকবো, ততদিন নাগরিক ঐক্যে কাজ করে অবদান রাখতে চাই। আমরা বেঁচে থাকব না। কিন্তু কবরে গিয়েও বলতে পারবো আমরাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কিছু করে আসছি এবং এদেশে গণতন্ত্রের শিকড় গেড়ে দিয়ে আসছি।
নাগরিক ঐক্য চাঁদপুর জেলার আহ্বায়ক মো. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ক শহীদুল্লাহ কায়সার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোফাক্কর ইসলাম, মঞ্জুরুল কাশেম, ফেরদৌসী আক্তার, নাগরিক ঐক্য চাঁদপুর জেলার সদস্য সচিব দিলদার হোসেন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে, মো. আব্দুর রাজ্জাককে আহ্বায়ক ও দিলদার হোসেনকে সদস্য সচিব করে ২১ সদস্য কমিটির ঘোষণা করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, এদেশ এ রাষ্ট্র জনগণের। যোগ্য নেতা বাছাই করা আমাদের কর্তব্য। আজ থেকে আমাদের লড়াই চলতে থাকবে দেশকে সুন্দর করতে। দেশের দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিসহ নানান অসুবিধা নিয়ে আমরা ভারো নেই। জন্মের পর থেকে একটি শিশু যেন সঠিক শিক্ষা ও সবধরনের সুবিধা পায়। সবাই সমান অধিকার যেন পায়। নাগরিক ঐক্য সেই কল্যাণরাষ্ট্র খুঁজছে। নিজের অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে। রাজনীতি থেকে ফিরে থাকা যাবে না, রাজনীতিতে থেকে জনগণের অধিকারকে বাস্তবায়ন করতে হবে। অধিকার কেউ কাউকে দেয়া যায় না, নিজের অধিকার নিজেকেই আনতে হবে। যে যখন ক্ষমতায় গেছে সে তখন নিজের কল্যাণই করেছে। নাগরিক ঐক্যের একার পক্ষে সম্ভব নয়, সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। এদেশের মানুষ যেন ঠিকমত বাঁচতে পারে নাগরিক ঐক্যের তা লক্ষ্য। আমরা চাই এদেশের গণমানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। আমাদের একার পক্ষে সম্ভব হবে না, ব্যাপক গণমানুষের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

১৯ নভেম্বর, ২০২১।