মনিরুল ইসলাম মনির
চিকিৎসক, কর্মচারী, চিকিৎসা সরঞ্জাম সংকটে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। এতে উপজেলার প্রায় ৫ লাখ লোকের একমাত্র সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে সেবা আশানুরূপ পাচ্ছে না।
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, এটি ৩১ শয্যার হাসপাতাল। রোগী ভর্তি ২৮।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১০টি চিকিৎসক পদের মধ্যে ৬টি পদই শূন্য। কর্মরত ৪ জন। এর মধ্যে ছুুটিতে ১ জন। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ৬টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ৩টি। একজন প্রেষণে টাঙ্গাইল দীর্ঘদিন যাবত। এখানে কর্মরত মাত্র ২ জন।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে ৮টি পদের মধ্যে ৬টি পদই শূন্য রয়েছে। কাগজে-কলমে কর্মরত ২ জন। এর মধ্যে একজন প্রেষণে। অপরজন অনুপস্থিত।
সরজমিন মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, ২৪ জনের মধ্যে ৫ জন চিকিৎসক কর্মরত। তারা হলেন, জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. ইসমাইল হোসেন, জুনিয়ার কনসালটেন্ট ডা. মেহেদী হাসান, মেডিক্যাল অফিসার ডা. ফাতেমা ওয়ালিজা হ্যাপি, মেডিক্যাল অফিসার ডা. আকলিমা জাহান, মেডিক্যাল অফিসার, ডা. আল-আমিন। জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. শংকর কুমার সাহা ছুটিতে রয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শূন্য পদগুলো হলো- জুনিয়ার কনসালটেন্ট গাইনী এন্ড অবস, জুনিয়ার কনসালটেন্ট এ্যানেসথেসিয়া, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার, মেডিক্যাল অফিসার ২ জন ও সহকারী ডেন্টাল সার্জন। এছাড়া মেডিক্যাল অফিসার ষাটনল-সাদুল্লাপুর, টরকি ও মোহনপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র।
মান্দারতলি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার ডা. নিগার সুলতানা প্রেষণে টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সহকারী সার্জনের ৮ টি পদে একজন ও কর্মরত নেই। সহকারী সার্জনের ৬টি পদই শূন্য রয়েছে। অপর ২ জনের মধ্যে ডা. গৌরি রানী দাস প্রেষণে মুগদাপাড়া হাসপাতালে। অপর সহকারী সার্জন অনুপস্থিত রয়েছে।
তাহলে বুঝা যায় পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের সেবার নমুনা। অথচ মানুষের ৫টি মৌলিক চাহিদার মধ্যে চিকিৎসা সেবা অন্যতম।
মাতৃ স্বাস্থ্য ভাউচার স্কিমের রোগী মৌসুমি আকতার (২২) বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সার্জন না থাকায় ডেলিভারীর সময় প্রাইভেট ক্লিনিকে সিজারে প্রসব অইছে।
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়ার কনসালটেন্ট ডা. মেহেদী হাসান জানান, চিকিৎসক স্বল্পতায় ইনডোর ও বহির্বিভাগে রোগী বেশি হওয়ায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়। দিনরাতই দায়িত্ব পালন করতে হয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়ার কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. ইসমাইল হোসেন জানান, ৩১ শয্যা হাসপাতালে রোগী ভর্তি ২৮ জন। চিকিৎসক কম, রোগী বেশি। কর্মরত চিকিৎসক ৫ জন। ছুটিতে ২ জন, প্রেষণে ২ জন। ২৪টি চিকিৎসক পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১৪টি। তিনি জানান, শিগগিরই চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন।
মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস বলেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । ফলে মুমূর্ষ রোগীদের চিকিৎসা করাতে ঢাকা অথবা চাঁদপুরে নিতে হচ্ছে।
চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. একেএম মাহাবুবুর রহমান জানান, পর্যায়ক্রমে লোকবল আসবে। তবে চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন।
- Home
- স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
- মতলব উত্তরে চিকিৎসক সংকটে মেলে না কাক্সিক্ষত সেবা
Post navigation
