মতলব সরকারি কলেজের জায়গা বেদখল হওয়ায় এবং মতলব পৌরসভার মেয়রের লোকজন অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে কলেজের কয়েকশ’ শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
মতলব সরকারি কলেজের আট-দশজন শিক্ষক জানান, রাস্তা নির্মাণের জন্য কলেজটির দক্ষিণ পাশের একটি পুকুরের ২৫-৩০ শতাংশ জায়গায় বাঁশের খুঁটি গেড়ে অবৈধভাবে দখল করে নেয় মতলব পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। কলেজটির অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি পৌরসভার মেয়রকে জায়গাটির দখল ছেড়ে রাস্তা নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখতে বলেন।
এরপরও পৌর কর্তৃপক্ষ সেখানে রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল সকাল ১০টায় মতলব পৌরসভার মেয়রের লোকজন রাস্তা নির্মাণের মালামাল নিয়ে কলেজটির ফটকের ভেতরে যেতে চাইলে কলেজটির অধ্যক্ষ বাঁধা দেন। এ নিয়ে অধ্যক্ষ ও মেয়রের লোকজনের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মেয়রের লোকজন অধ্যক্ষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং তাঁকে লাঞ্ছিত করেন। ঘটনাটি কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছলে তারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং কলেজটির জায়গা বেদখল হওয়ায় ও অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে কলেজ চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে মিছিল সহকারে তারা উপজেলা পরিষদ চত্বরে যান এবং ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কলেজটির জায়গা দখলকারীদের বিরুদ্ধে এবং অধ্যক্ষ লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ¯েøাগান দেন। পরে ইউএনও’র হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
মতলব সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল কালাম আল আজাদ, শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জি এম হাবিব খান, সহকারী অধ্যাপক মো. মোশারফ হোসেন ও আইনুন্নাহার কাদ্রি অভিযোগ করেন, কলেজকে না জানিয়ে ফিল্মি স্টাইলে কলেজের ২৫-৩০ শতাংশ জায়গা দখল করে সেখানে ব্যক্তিগত পর্যায়ের রাস্তা বানাচ্ছেন পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন লিটন। বেদখল জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য তারা বারবার মেয়রকে বলেও লাভ হয়নি। উল্টো অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনার বিচার চান তারা।
মতলব পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন লিটন জানান, কলেজটির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও সদস্যদের সঙ্গে পৌরসভার সমঝোতার ভিত্তিতে কলেজের ওই জায়গায় রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। নির্মাণ কাজের টেন্ডার আহŸানের পর ঠিকাদার সেখানে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই রাস্তা নির্মাণ করছেন। অথচ কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই কাজে ঠিকাদারকে বাঁধা দিচ্ছেন। তিনি কয়েক দিন ধরে ঢাকায় আছেন। অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি বা লাঞ্ছিতের ঘটনাটি অস্বীকার করেন তিনি।
মতলব দক্ষিণ ব্যুরো
২৬ জুন ২০১৯