হাইমচরে অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালকদের হাতে ইজিবাইকের স্টিয়ারিং


সাহেদ হোসেন দিপু
হাইমচর উপজেলায় অপ্রাপ্ত বয়স্ক, অদক্ষ চালকদের হাতে ইজিবাইক স্টিয়ারিং। আর সামনের এঙ্গেল ও বেপরোয়া গতির কারণে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। হাইমচর উপজেলার বিভিন্ন সড়কে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাগামী কোমলমতি শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ সবসময় ইজিবাইকের দুর্ঘটনার আতংকে পথ চলতে হয়। বিভিন্ন স্থানে বেড়েই ছলছে ইজিবাইক দুর্ঘটনা। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে ইজিবাইক চালকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ইজিবাইক সংঘর্ষে নিহত হওয়ার পাশাপাশি হাত-পা ভেঙে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে অনেকেই। অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালক আর গাড়ির সামনের এঙ্গেল অপসারনে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন সাধারণ মানুষ।
সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সদর আলগী বাজারে বিসমিল্লাহ মোড়, থানা রোড, সোনালি ব্যাংক সংলগ্ন, বড় মসজিদ সংলগ্ন, কাটাখালি রোড সহ বেশ কয়েকটি ইজিবাইক স্ট্যান্ড রয়েছে। ইজিবাইকের জন্য উপজেলা সদরে ২টি স্ট্যান্ড ছাড়া উপজেলার কোথাও কোন নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড নেই। যার কারণে আলগীবাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারগুলো রয়েছে ইজিবাইকের দখলে। চালকরা যত্রতত্র সারি বেঁধে ইজিবাইক রেখে সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে যখন-তখন ইজিবাইক রাখছে চালকরা। ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এসব স্ট্যান্ডগুলোতে বেশিরভাগ ইজিবাইক চালক অপ্রাপ্ত বয়স্ক। ১২/১৩ বছরের কম বয়সী কিশোরদের দিয়ে চালানো হয় ইজিবাইক। ইজিবাইক চালকদের মধ্যে কেউ কৃষি শ্রমিক কিংবা আগে রিক্সা-ভ্যান চালাতেন। শতকরা ৯০ ভাগ চালক জানে না কিভাবে ইজিবাইক চালাতে হয়। যার ফলে প্রতিনিয়ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী যাত্রীসহ পথচারীদের।
উপজেলা সদর হতে চরভৈরবী সড়কে ইজিবাইক চালক বিল্লাল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ২ বছর যাবত ইজিবাই চালাই। আমার বয়স এখন প্রায় ৪০ বছর। আমি সবসময় দেখে শুনে সতর্কতার সাথে গাড়ি চালাই। আমার গাড়ির সামনে এঙ্গেল লাগিয়েছি গাড়ির নিরাপত্তার জন্য। অপ্রাপ্ত বয়স্ক আর অদক্ষ চালকরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে আমাদের গাড়ির সাথে গাড়ি লাগিয়ে দিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। আমাদের চরম ক্ষতি করছে তারা।
উপজেলা সদরের বিসমিল্লাহ মোড়ে ইজিবাইক স্ট্যান্ড মালিক সুমন শিকদার জানান, ইজিবাইকের সামনে বিপজ্জনক এঙ্গেল লাগানোর কারণে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে চালকরা। প্রশাসন এঙ্গেলগুলো খুলে ফেলার ব্যবস্থা করলে ৯০ ভাগ দুর্ঘটনা কমে যাবে।
সুমন শিকদার আরো জানান, ইজিবাইক চালকদেরকে আমরা বহুবার বলেছি কানে হেডফোন দিয়ে গাড়ি না চালানোর জন্য এবং গাড়িতে বক্স না বাজাতে। চালকরা স্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যাওয়ার পরেই বক্স বাজানো শুরু করে। যার ফলে দুর্ঘটনা কবলিত হয় গাড়ি।
ইজিবাইক চালক শিশু সাগরের কাছে জানতে চাইলে সে জানায়, আমি গাড়ি চালাই পেটের দায়ে। আমার বাবা অসুস্থ, আমি গাড়ি না চালালে সংসার চলে না। আমাকে অন্য কোন পেশার ব্যবস্থা করে দিলে আমি গাড়ি চালাবো না।
হাইমচর থানা অফিসার ইনচার্জ মো. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ১২/১৩ বছরের শিশুরা ইজিবাইক চালাবে, এটা হতে পারে না। আমি অচিরেই যে ব্যক্তিরা শিশুদের দিয়ে ইজিবাইক চালায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। এছাড়া ইজিবাইকের সামনে যে এঙ্গেল লাগানো আছে তা খুলে ফেলার জন্য স্ট্যান্ড কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিব। যদি তা না খোলে ঐসব ইজিবাইকের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণ করবো।

০৫ আগস্ট, ২০১৯।