এখতিয়ারাধীন মামলা গ্রাম আদালতে বিচারের ক্ষেত্রে পুলিশের সহযোগিতা দরকার
………………. মোহাম্মদ শওকত ওসমান
স্টাফ রিপোর্টার
সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে গ্রাম আদালত একটি অন্যতম উদ্যোগ। স্থানীয় বিরোধ স্থানীয়ভাবে নিস্পত্তির জন্য একে সক্রিয় করা এখন সময়ের দাবি। উচ্চ আদালতে মামলার অপরিসীম চাপ কমানোসহ সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘবের লক্ষ্যে গ্রাম আদালত সক্রিয় করা একান্ত প্রয়োজন। এজন্য সবার সহযোগিতা লাগবে। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, অধিদপ্তর ও বিভাগ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এমনকি চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন মিডিয়াগুলোও গ্রাম আদালতের প্রচার-প্রচারণায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। এজন্য তাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
চাঁদপুর সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত গ্রাম আদালত বিষয়ক ৬ষ্ঠ ব্যাচের রিফ্রেসার্স প্রশিক্ষণ উদ্বোধনকালে কথাগুলো বলেন চাঁদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান।
তিনি আরো বলেন, পুলিশ থানার অফিসার ইনচার্জরা যদি গ্রাম আদালতের এখতিয়ারাধীন মামলাসমূহ গ্রাম আদালতে বিচারের জন্য পাঠাতেন তাহলে ইউনিয়ন পরিষদের আদালতগুলো প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে দারুন সহায়ক হতো। কারণ, এখনো এখতিয়ারাধীন বহু মামলা ভুলক্রমে পুলিশ থানায় চলে যায়। এ ক্ষেত্রে চাঁদপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা যেভাবে গ্রাম আদালতের এখতিয়ারাধীন মামলাগুলো ছোট-ছোট নোট দিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের আদালতে পাঠিয়ে দেন সেরূপ থানার অফিসার ইনচার্জরাও পাঠাতে পারেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউএনডিপি’র সহযোগীতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত প্রশিক্ষণে গত শনিবার সকালে ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর (ডিএফ) নিকোলাস বিশ্বাসের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে চাঁদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের সহযোগী সংস্থা তথা ব্লাস্টের জেলা সমন্বয়কারী মো. আমিনুর রহমান, উপজেলা সমন্বয়কারী গৌতম কুমার সরকার। প্রশিক্ষণে শাহরাস্তি ও মতলব-দক্ষিণ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কর্মরত মোট ২৮ জন সচিব ও গ্রাম আদালত সহকারী অংশগ্রহণ করেন।
বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রাম আদালতের এখতিয়ারাধীন মামলাসমূহ ভুলক্রমে পুলিশ থানাগুলোতে চলে আসলে সেগুলো সংশ্লিষ্ট গ্রাম আদালতে পাঠানোর জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে। তবে এ ব্যাপারে আইনগত সংশোধনী থাকলে পুলিশ থানা থেকে সহজেই গ্রাম আদালতের এখতিয়ারভূক্ত মামলাগুলো রেফার করা সম্ভব হবে।
তিনি আরো বলেন, ছোট-খাট বিরোধ থানায় আসলে সেগুলোর জন্য পুলিশ সদস্যদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হয়। থানার দাপ্তরিক কাজসহ বড়-বড় এসাইনমেন্ট বাস্তবায়নে সমস্যা হয়। এজন্য গ্রাম আদালতের সাথে সংশ্লিষ্ট সব ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের আরো সচেষ্ট হতে হবে যাতে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। গ্রাম আদালত নিয়মিতকরণের মাধ্যমে ইউপি চেয়ারম্যানকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।
২ জুলাই, ২০১৯।