স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুর শহরের ব্যাংক কলোনী এলাকার বাসিন্দা নির্মাণ শ্রমিক কিশোর মো. শাহিন (১৫) হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। হত্যার ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি শান্তকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এলাকার নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের লোকজন।
বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে এলাকাবাসী ‘কিশোর গ্যাং মুক্ত সমাজ চাই’ স্লোগানে শাহিন হত্যার দাবি করেন। তারা অবিলম্বে শাহিন হত্যার ঘটনায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি করেন।
গত শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দিনগত রাত আনুমানিক ৯টার দিকে শহরের চেয়ারম্যানঘাট অ্যাড. হেলাল উদ্দিনের বাসার সামনে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শাহিনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে একই এলাকার বাসিন্দা শান্তসহ তার সহপাঠী কিশোর গ্যং সদস্যরা।
হত্যার শিকার শাহিন ব্যাংক কলোনী এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা মো. স্বপন সরকারের ছেলে। এই ঘটনায় রাতেই ব্যাংক কলোনীর অজয়ের ছেলে শান্তকে প্রধান আসামি করে নামীয় ৬ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলার বাদী হলেন শাহিনের মা সাজেদা বেগম সাজু।
নিহত শাহিনের স্বজন আব্দুর রহমান শুভ বলেন, ২১ আগস্ট শহরের ব্যাংক কলোনী কালার মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে জড়ায় দুই পক্ষের কিশোররা। ওই সময় শান্ত নামের এক কিশোরের সঙ্গে শাহিনের বাগবিতণ্ডা হয়। সেই দ্বন্দ্বের সূত্র ধরে ৪০-৫০ জন কিশোর মিলে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। তারা শাহিনের গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কোপায়। ওই সময় তার সঙ্গে ফাহিম নামের ছেলেকেও কোপাতে থাকে। আমরা তাদের উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল নিলে শাহিনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। গুরুতর আহত জিহাদুল ইসলাম ফাহিমকে (১২) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠনো হয়।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শাহিনের মা সাজেদা বেগম বলেন, আমার ছেলে কী এমন করেছে, তাকে মাইরা ফেলতে হবে। আমার এই ছেলে ছাড়া আর কেউ নাই। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মুনসুর আহমেদ বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ওই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মো. শেখ মুহসীন আলম বলেন, আমরা প্রাথমিক তদন্ত করে জানতে পারি ফুটবল খেলায় সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে কিশোরদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। বাকিটা পুরো তদন্তসাপেক্ষে বলা যাবে। শাহিনের মা মামলা করেছে। ইতোমধ্যে প্রধান আসামি শান্ত গ্রেপ্তার হয়েছে। বাকি আসামিদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
২৫ আগস্ট, ২০২৪।