ফরিদগঞ্জে ৩ যুবদল কর্মী হত্যা মামলায় আসামি ৭৩৫ জন

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো
দীর্ঘ ১১ বছার পর ফরিদগঞ্জে তিন যুবদল কর্মী হত্যার মামলা আদালতে দায়ের করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের এক সদস্য। গত রোববার ফরিদগঞ্জ আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহত যুবদল কর্মী আরিফ হোসেনের ভাই দেলোয়ার হোসেন। মামলায় ৩শ’ ৩৫ জন নামীয় এবং ৪শ’ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ৭৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দেয় ১৮ দলীয় জোট। ঐদিন বিকাল ৪টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার জোট নেতা-কর্মীরা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একযোগে মিছিলে অতর্কিত হামলা চালায়। ফরিদগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি নাজমুল হকের দেওয়া তথ্যানুসারে মিছিলে ২৪২ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ২৯ রাউন্ড চায়না পিস্তলের গুলি ও ১১ রাউন্ড টিয়ার গ্যাস ছোঁড়া হয়। এতে মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবদলের তিন কর্মী জাহাঙ্গীর বেপারী, আরিফ হোসেন ও বাবুল ভূঁইয়া নিহত হন।
পরিবারের পক্ষ থেকে ওই সময়ে মামলা করা হলেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পাল্টা মামলার কারণে তাদের মামলাগুলো টিকেনি। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ ডিসেম্বর আদালতে মামলা করেন নিহত আরিফ হোসেনের ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেন।
মামলায় ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার, জাহিদুল ইসলাম রোমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম কাজল, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মাহফুজুল হক, যুবলীগ নেতা মো. মাসুদ হোসেন ভূঞা (কিলার মাসুদ), উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. অহিদুর রহমান রানা, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম রিপন, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারী আকবর হোসেন মনিরসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ৩৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪০০ জনসহ মোট ৭৩৫ জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। তবে এতে পুলিশ কিংবা প্রশাসনের কাউকে আসামি করা হয়নি।
নিহতরা তিন জন হলেন- জাহাঙ্গীর বেপারী উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব গাজীপুর তিন কড়ি বেপারী বাড়ির আব্দুল মতিন বেপারী ও তফুরেরনেছা দম্পতির ছোট ছেলে; রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বার পাইকা গ্রামের আব্দুল আলিম ও হাজেরা বেগমের ছেলে আরিফ হোসেন এবং একই ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের আব্দুর রহিম ও সফুরা বেগমের ছেলে বাবুল ভূঁইয়া।
মামলার বাদী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা করে মামলাটি দায়ের করেছি। আমি ন্যায়বিচার চাই।
মামলার আইনজীবী মো. আবুল খায়ের স্বপন বলেন, মামলাটি আদালত আমলে নেয়ার পর তৎকালীন সময়ে ফরিদগঞ্জ থানায় যে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে ওই মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য থানাকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

১১ ডিসেম্বর, ২০২৪।