চাঁদপুর শহরের ১৪টি বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষায় ৩৩৯ শিক্ষার্থীর জিপিএ-৫ অর্জন


এস এম সোহেল
সারাদেশে একযোগে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের দাখিল এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের আওতায় ভোকেসনাল পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে ফলাফল ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের বাঁধভাঙা আনন্দ ফুটে উঠে। মাধ্যমিক পেরিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের সোপানে পা রাখতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের চোখে-মুখে ছিল স্বপ্ন। শিক্ষার্থীরা এ সময় উন্নত এবং সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে ছিলো উল্লোসিত।
সারা দেশের মতো চাঁদপুরেও এসএসসি ২০১৯ সালের ফলাফল রোববার প্রকাশ হয়েছে। চাঁদপুর শহরের ১৪টি বিদ্যালয় থেকে ৩৩৯ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করেছে।
শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৩৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০৬ জন, এ গ্রেড পেয়েছেন ৯০জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ২৮ জন, বি প্রেড পেয়েছেন ৯ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ১০০%।
আল-আমিন একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৬০৯জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে ৫৯২ জন কৃতকার্য ও ১৭ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪০ জন, এ গ্রেড পেয়েছেন ২২৭ জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ১১৮ জন, বি প্রেড পেয়েছেন ৭৯ জন, সি গ্রেড পেয়েছে ২৮ শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৭.২১%।
মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর বিদ্যালয় থেকে মোট ২৯৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে ২৮১ জন পরীক্ষার্থী কৃতকার্য এবং ১৮জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৭ জন, এ গ্রেড পেয়েছেন ১৪২ জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ৪৭ জন, বি প্রেড পেয়েছেন ২১ জন, সি গ্রেড পেয়েছে ৪ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৩.৯৮%।
মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৮৭ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ১৭০ জন ও ১৭ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ জন, এ গ্রেড পেয়েছেন ২৮ জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ৪৭ জন, বি প্রেড পেয়েছেন ৪৭ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৮২.৮৪%।
পুরাণ বাজার ওচমানিয়া সিনিয়র ফাযিল ডিগ্রি মাদ্রাসা থেকে ৬৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৬৫ জন ও ৩ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ জন, এ গ্রেড পেয়েছেন ৩৭জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ১৫ জন, বি প্রেড পেয়েছেন ৫ জন, সি গ্রেড পেয়েছে ১ শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৫.৫৯%।
গণি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৪১ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ১৩৩ জন ও ৮ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৪.৩৩%।
আক্কাছ আলী রেলওয়ে একাডেমী থেকে ৬৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৬১ জন ও ৩ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন, এ গ্রেড পেয়েছেন ১৭জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ১৩ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৫.৩১%।
লেডী প্রতিমা মিত্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৬৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ১৪২ জন ও ২১ জন অকৃতকার্য হয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন, এ গ্রেড পেয়েছেন ৪৪ জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ৪৭ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৮৭.১২%।
শহীদ জাবেদ পৌর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩৫ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৩২ জন ও ৩ জন অকৃতকার্য হয়। এ গ্রেড পেয়েছেন ৬ জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ১১ জন, বি গ্রেড পেয়েছে ৮ জন, সি গ্রেড পেয়েছে ৮ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯১.৪৩%।
পুরাণ বাজার নূরিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৫৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৪৩ জন ও ১৬ জন অকৃতকার্য হয়। এ গ্রেড পেয়েছেন ১৬ জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ১৯ জন, বি গ্রেড পেয়েছে ১৮ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯০.০০%।
ডিএন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৯৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৮৮ জন ও ১১ জন অকৃতকার্য হয়। এ গ্রেড পেয়েছেন ৯ জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ২৯ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৮৮.৮৯%।
লেডী দেহলভী বালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৯২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৮০ জন ও ১২ জন অকৃতকার্য হয়। এ গ্রেড পেয়েছেন ১৫ জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ২২ জন, বি গ্রেড পেয়েছে ২৬ জন, সি গ্রেড পেয়েছে ১৬ জন, ডি গ্রেড পেয়েছে ১ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৮৬.৯৬%।
পীর মহসীন পৌর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৪৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ৩২ জন ও ১২ জন অকৃতকার্য হয়। এ গ্রেড পেয়েছেন ৩ জন, এ মাইনাস পেয়েছেন ২৩ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৭২.৭৩%।
পুরাণ বাজার হাফেজ মাহমুদা পৌর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতকার্য ১৮ জন ও ১১ জন অকৃতকার্য হয়। এ প্লাস ও এ গ্রেড নাই, এ মাইনাস পেয়েছেন ২ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৬২.০৭%।
হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের আগের ঐতিহ্য এখনো অব্যাহত রয়েছে। এ বছরও আমাদের বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় কোন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়নি। যার ফলে হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছরও পাসের হার শতভাগ। আমরা অভিভাবকদের বলব আগামিতে যারা এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে এখন থেকেই আপনারা আপনাদের সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখবেন। তাহলে ভালো ফলাফল করতে পারবে, বাবা-মায়ের পাসাপাশি বিদ্যালয়ের মান উজ্জ্বল করতে পারবে।
মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার সাহা বলেন, মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল আগের ধারাই রয়েছে। আমরা চাই আরো ভালো ফলাফল করার জন্য। এ বিদ্যালয়ের সুনাম যেন আরও বৃদ্ধি পায় সেজন্য শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আরও আন্তরিক হতে হবে।
আল-আমিন একাডেমীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মকবুল হোসেন জানায়, শিক্ষার্থীদের ভাল ফলাফল অর্জনে আমাদের শিক্ষক/শিক্ষিকাদের অবদান রয়েছে। এ ফলাফল অর্জনে অভিভাবকরাও কৃতিত্বের অধিকারী। সর্বোপরি এই ফলাফলের জন্য আমরা মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি। ভবিষ্যতে আরো ভালো ফলাফল অর্জন করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সে ক্ষেত্রে পুরো চাঁদপুরবাসীর পূর্ণ সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি।