মাহ্ফুজ মল্লিক
মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর সারপাড় গ্রামে গত সোমবার রাত আনুমানিক ৩টায় অমর চন্দ্র সরকার (৩৭) নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত অমর চন্দ্র সরকার নারায়ণপুর ইউনিয়নের সারপাড় গ্রামের রবি চন্দ্র সরকারের ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনিক (২২) নামের তার দোকানের কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, অমর চন্দ্র সরকার গত সোমবার সন্ধ্যায় তার দোকান বন্ধ করে ব্যবসায়িক কাজে তার কর্মচারী অনিককে সাথে নিয়ে মতলব উপজেলা সদরের বাজারে যান। কাজ শেষ হওয়ার পর মতলব বাজারের কলাদী এলাকায় তার ছোট বোনের বাসায় দেখা করে রাতেই নারায়নপুরের দোকানে যান। দোকান থেকে যাওয়ার পর নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে লাশ রেখে চলে যায়।
অমর চন্দ্র সরকারের বড় বোন মাধুবী বলেন, কাস্টমারের কাজে তারা মতলব বাজারে গিয়েছিল এবং সেখান থেকে ছোট কলাদী এলাকায় ছোট বোনের বাসায় দেখা করে রাত ১১টার আগেই ওই বাসা থেকে নারায়ণপুরের উদ্দেশে চলে আসে। কিন্ত বাসায় ফিরেনি। তাদের ধারণা ছিল দোকানে কাজের ব্যস্ততায় ফিরতে দেরী হতে পারে।
কর্মচারী অনিকের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, রাতে দোকান বন্ধ করে নগদ টাকা ও স্বণালংকার নিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে মুখোশপড়া কয়েকজন অজ্ঞাতনামা যুবক পেছন থেকে তার চোখ ও মুখ বেঁধে অজ্ঞান করে ফেলে অমরকে হত্যা করে। রাত আনুমানিক আড়াইটায় কর্মচারী অনিকের জ্ঞান ফিরলে দেখতে পায় অমর চন্দ্র সরকারের গলা কাটা লাশ বাড়ির আঙ্গিনায় বালুর মাঠে পড়ে আছে। খবর পেয়ে রাতেই সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত, মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মহিউদ্দিন মিয়াসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন।
অমর সরকারের বাবা রবি চন্দ সরকার বলেন, প্রতিদিনের মতো আমি আমার ছেলের জন্য রাতে অপেক্ষা করতে থাকি। সে রাত ১০টা থেকে ১১ টার মধ্যেই বাড়িতে ফিরে আসে। কিন্তু ঘটনার দিন রাত গভীর হলেও ছেলে বাড়িতে আসেনি। পরে খবর পাই বাড়ির উঠানে অমরকে হত্যা করা হয়েছে।
অমর সরকারের স্ত্রী প্রিয়াংকা সরকার জানান, ঘটনার ৭/৮ দিন আগে আমি আমার বাবার বাড়িতে যাই। ঘটনার আগের দিন অমরের সাথে আমার ফোনে কথা হয়েছে। ঘটনার দিন আমি মোবাইলে ফোন করেছিলাম, কিন্তু ফোন রিসিভ করেনি। এ ঘটনা শুনে রাতেই চলে এসেছি।
স্থানীয় বাজার বণিক সমিতির সভাপতি স্বপন মজুমদার বলেন, অমর বাজারের একজন পুরনো স্বর্ণ ব্যবসায়ী। এছাড়া তিনি নগদ ও মোবাইল রিচার্জের ব্যবসাও করতেন। ধারণা করা হচ্ছে স্বর্ণ ও নগদ টাকার জন্য দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে তা লুটপাট করে নিয়ে গেছে।
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, সংবাদ পেয়ে ভোর রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কর্মচারী অনিককে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২।
